বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কারফিউ জারি করার অভিযোগে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপুকে অবরুদ্ধ করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি— গত বছরের ৪ আগস্ট অপুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে কারফিউ জারি হয়েছিল। তাই তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদের বাংলাদেশ বেতার ভবনের নিজ কার্যালয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ গিয়ে অপুকে তাকে হেফাজতে নিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা ওনাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে আমরা গিয়ে ওনাকে হেফাজতে নিয়ে আসি। তিনি যেহেতু সরকারি কর্মকর্তা সেহেতু এ বিষয়ে বাংলাদেশ বেতার কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে আলাপ করছেন।

ওসি আরও বলেন, খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওনার বিরুদ্ধে দুদকে একটি মামলা রয়েছে। আমরা দুদকের সাথেও যোগাযোগ করেছি। তাদের তদন্ত চলমান রাখা অবস্থায় আটক দেখাবে কিনা তারা জানাবেন। আমরা ঊর্ধ্বতনদের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেব।
মো. শরীফ মাহমুদ অপু কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ণমতি গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদিনের ছেলে। তাঁর বাবা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
শরীফ মাহমুদ অপু তেজগাঁও-হাতিরঝিল থেকে নির্বাচিত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রায় ১০ বছর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। অভিযোগ আছে, অবৈধ আয়ের অর্থে বাড়ি, গাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট এমনকি ব্যাংককের পাতায়ায় রেস্টুরেন্ট দিয়েছেন তিনি। রাজধানীর বসুন্ধরা, উত্তরা ও গুলশানে বেশ কয়েকটি দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করেছেন। নিজের ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে রয়েছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।
আরও অভিযোগ আছে, পুলিশের এসপি, ওসি ও এসআই বদলির পাশাপাশি তিনি অন্তত অর্ধশত ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের লাইসেন্স পাইয়ে দিয়েছেন। যার বিনিময়ে অপু নিজের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের জন্য নিয়েছেন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে। এসব টাকার বড় একটি অংশ দিতে হতো কামালের ছেলে অথবা তাঁর স্ত্রীর কাছে।