১৯শে জুন, ২০২৫

চট্টগ্রামে হবে ৫৪ কি.মি. দীর্ঘ মনোরেল, দুই বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চসিকের চুক্তি সম্পন্ন

শেয়ার করুন

বাংলাদেশের প্রথম মনোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামে। মোট তিনটি রুটে দীর্ঘ ৫৪ কিলোমিটার লাইন তৈরি করা হবে। এতে খরচ হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। আর এর পুরোটাই বিনিয়োগ করবে দুইটি বিদেশি সংস্থা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শুধুমাত্র জায়গা এবং লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে, বাকি সবকিছু ওই দুই বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের।

সমঝোতা চুক্তির পর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন আশা প্রকাশ করে বলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ এশিয়ার ‘গেটওয়ে’ হিসেবে গড়ে উঠবে।

আজ রোববার (১ জুন) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চেম্বার মিলনায়তনে মনোরেল চালুর লক্ষ্যে চসিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আয়োজিত এক সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রামের যানজট নিরসন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই গণপরিবহন ব্যবস্থার লক্ষ্যে আমরা বহু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তবে মনোরেল প্রকল্প হবে এ সমস্যাগুলোর সবচেয়ে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

তিনি জানান, প্রস্তাবিত মনোরেল প্রকল্পের অর্থায়ন করবে বিদেশি দুটি প্রতিষ্ঠান—ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস। পুরো বিনিয়োগ তারাই বহন করবে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কোনো আর্থিক দায় থাকবে না। চসিক কেবল ভূমি বরাদ্দ ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহায়তা দেবে।

মনোরেল প্রকল্পের অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত দিক ব্যাখ্যা করেন আরব কন্ট্রাক্টরস ও ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের চীফ রিপ্রেজেন্টেটিভ কাউসার আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। এখানে যানজট ও পরিবহন সংকট ক্রমবর্ধমান। মনোরেল একটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব সমাধান। আমরা এই প্রকল্পে পূর্ণাঙ্গ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে বাস্তবায়ন করা হবে। বিনিয়োগ আসবে NAS Investment এবং National Bank of Egypt-এর মাধ্যমে।

তিনি জানান, সম্ভাব্য তিনটি রুটে মনোরেল চলবে। এরমধ্যে প্রথম রুট অর্থাৎ লাইন ১ হবে ২৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার। যা কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর (বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট, পতেঙ্গা) পর্যন্ত হবে। দ্বিতীয় রুট বা লাইন ২ হবে ১৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার, যা নগরের সিটি গেট থেকে শহীদ বাশিরুজ্জামান স্কয়ার (এ.কে. খান, নিমতলী, সদরঘাট, ফিরিঙ্গি বাজার) পর্যন্ত হবে। সর্বশেষ রুট অর্থাৎ লাইন ৩ হবে ১৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার যা অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গি বাজার (মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালি) পর্যন্ত।

তিনি আরও বলেন, টিকিট ছাড়াও মনোরেল থেকে রাজস্ব আসবে বিজ্ঞাপন, স্টেশনভিত্তিক দোকান ও আশপাশের জমির মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে। ভালো গণপরিবহন ব্যবস্থা অর্থনীতিতে ৫ থেকে ৭ গুণ রিটার্ন এনে দিতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের সদস্য সচিব নাজির শাহীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন