গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ফেসবুক লাইভে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন, এমন ঘোষণার পর প্রথমে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি ভাঙচুর এবং বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।
গতকাল রাত ৯টায় শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ছাত্র-জনতা এতটাই ক্ষিপ্ত হন যে, রাত ৮ বাজলেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ভাঙচুর শুরু করেন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতার বাড়ি ভাঙচুর এবং গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
চলুন জেনে আসি, কোথায় কার বাড়ি ভাঙচুর কিংবা গুড়িয়ে দেওয়া হলো

খুলনা
খুলনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার বাড়ি ‘শেখ বাড়ি’ ভাঙার মধ্য দিয়ে ঢাকার বাইরে এ ধরনের কাজ শুরু হয়। বাড়িটি খুলনা শহরের ময়লাপোতা এলাকায় অবস্থিত।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা এক্সকাভেটর দিয়ে বাড়িটির একাংশ গুড়িয়ে দেয়। গতকাল বুধবার রাত নয়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ঘোষণা দিয়ে ওই ভাঙচুর শুরু করেন। রাতভর দুটি এক্সকাভেটর চালিয়ে বাড়ির প্রধান ফটক, দেয়ালসহ বেশির ভাগ অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ আবু নাসেরের। এ বাড়িতে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বিসিবির সাবেক পরিচালক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শেখ সোহেল উদ্দিনসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা বসবাস করতেন। মূলত ওই বাড়ি থেকেই পদ্মার এপারের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো।
চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও নগরের জামালখান এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেন। মেডিকেলে ভাঙচুরের পর মশালমিছিলটি নগরের জামালখান এলাকায় যায়। সেখানে দেয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেন।
এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দেন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের চশমা হিলের বাড়ি এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হবে। ঘোষণাটি ভাইরাল হওয়ার পর বাড়ি দুটির আশপাশের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে চলে যায়। এখন পর্যন্ত কারও বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেনি।
মিরসরাই উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভেঙ্গে দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরা।
বরিশাল
বরিশালে আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়ি ভাঙা হয়। এর মধ্যে একজন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহ এবং অন্যজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু।
গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কালীবাড়ি রোডে সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনের সামনে ভিড় জমান। রাত দেড়টার দিকে বাসভবন ঘিরে ভাঙচুরের একপর্যায়ে বুলডোজার দিয়ে বাড়ির নিচতলার একাংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
একই সময় রাত দুইটার দিকে বরিশাল শহরে আমির হোসেন আমুর বাসভবন বুলডোজার দিয়ে ভাঙা শুরু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা সকাল পর্যন্ত তিনতলা বাড়ির একতলার নিচের অংশ ভেঙেছেন।
পিরোজপুর
পিরোজপুরে সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল এবং তাঁর ভাই সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। গতকাল রাত একটার দিকে শহরের পাড়েরহাট সড়কে এ ঘটনা ঘটে। গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ ও ৬ আগস্ট বাড়ি দুটিতে একাধিকবার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সিলেট
সিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙচুর হওয়া ম্যুরালটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল রাত ১০টার দিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে তারা।
এর আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে নগরের কিনব্রিজ এলাকা থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি বুলডোজার (হুইল এক্সকাভেটর) নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে যান। পরে তাঁরা ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেওয়া শুরু করেন।
নওগাঁ
বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। একইসঙ্গে নওগাঁ-১ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের পাঁচটি ম্যুরাল এবং শহরের একটি পাড়ায় থাকা একটি মাজার গতকাল রাতে ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে একদল শিক্ষার্থী প্রথমে পৌর ভবন চত্বরে জড়ো হন। সেখানে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। এরপর শহরের ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে গিয়ে তাঁরা শেখ মুজিবর রহমানের আরেকটি ম্যুরাল ভাঙচুর করেন। একে একে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ ও সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে থাকা ম্যুরালগুলো ভেঙে ফেলা হয়। গভীর রাতে পৌর শহরের হাছননগর এলাকায় হুসেন বখত চত্বরের দক্ষিণ পাশে থাকা ‘ডংকা শাহের মাজার’ হিসেবে পরিচিত আধা পাকা ছোট ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
রংপুর
রংপুরে গতকাল রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের এক্সকাভেটর এনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামফলক ভেঙে ফেলা হয়।
রাজশাহী
সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকসিংগা মহল্লায় অবস্থিত বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ছাড়া উপজেলার মণিগ্রাম ইউনিয়নের সাফারি গ্রামে শাহরিয়ার আলমের ট্রেনিং সেন্টারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সব নামফলক, গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন মুছে দিতে বিক্ষোভ করছেন একদল শিক্ষার্থী। গতকাল রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে মিছিল নিয়ে কয়েকটি আবাসিক হলের নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নওশাদ আলীর বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে।
নাটোর
নাটোর শহরে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের (শিমুল) জান্নাতি প্যালেসে আবার আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শফিকুল ইসলামের ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিল।
পাবনা
পাবনার ঈশ্বরদীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এক্সকাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনা আবাসিক হলের নামফলক এবং সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শেখ রাসেল আবাসিক হলের নামফলক ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ নগরের সার্কিট হাউস মাঠসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল রাতে হাতুড়ি-শাবল নিয়ে ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।
অপর দিকে ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হলের ‘মুজিব ম্যুরাল’।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। সেই সঙ্গে শেখ মুজিবের একটি ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে।
গত বছরের ৪ আগস্ট আন্দোলনের সময় ও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও আওয়ামী লীগের লোকজনের কয়েকটি বাড়ি ও স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
কুমিল্লা
কুমিল্লায় সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধরা পেট্রল ঢেলে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ওই বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছিল।
এর আগে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের রামঘাট এলাকায় অবস্থিত কুমিল্লা মহানগর ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা চালানো হয়। বিক্ষুব্ধরা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থাকা ইটের গাঁথুনি ভেঙে ফেলেন।
নোয়াখালী
আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। আজ বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মির্জার দ্বিতল পাকা ভবনে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালান।
নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাঁনমারী এলাকায় অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে কালো কালিতে ঢেকে দেওয়া শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। আজ বেলা ১১টার দিকে একদল আইনজীবীর উপস্থিতিতে হামার দিয়ে শ্রমিকেরা এই প্রতিকৃতি ভাঙচুর করেন।
এর আগে গত বছরের ২৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছিল বিএনপির সাংস্কৃতিক দল জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতা-কর্মীরা। ওই সময় সেখানে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।
কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় এক্সকাভেটর দিয়ে ভাঙা হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির একটি অংশ।
এদিকে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হল থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম মুছে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এর আগে রাত নয়টার দিকে ক্যাম্পাসে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা ম্যুরালে ক্ষমতাচ্যুত সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পোস্টার ঝুলিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে জুতা নিক্ষেপ করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা
‘এক্সকাভেটর মিছিল’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের চারটি ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রাত ১১টায় সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে যান। এরপর সেখানে শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের দুটি ম্যুরাল প্রথমে হাতুড়ি, শাবল ও রড দিয়ে ভাঙচুর করা হয়। দিবাগত রাত ১২টার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলার পাশাপাশি প্রধান ফটক, গ্রিল, নিচতলার দেয়ালের আংশিক ভেঙে দেওয়া হয়। রাত একটার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল একই এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
যশোর
যশোরে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার সাতটি ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও নামফলক ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হাতুড়ি দিয়ে এসব স্থাপনা ভাঙচুর করে। এসব স্থাপনা গত বছর ৫ আগস্টের পর কমবেশি ভাঙচুর করা হয়েছিল।
এদিকে যশোরের কেশবপুরে গতকাল রাতে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এস কে সাদেকের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে।
জামালপুর
অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি এলাকায় তার গ্রামের বাড়িতে প্রবেশ করে বিক্ষুব্ধরা। এর আগে ধানমন্ডি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
এ সময় বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধরা। একপর্যায়ে বাড়ির ভেতর আগুন দেওয়া হয়। বাড়িটি অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলীর পারিবারিক সম্পত্তি। তিনি সবশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মননোয়্নপ্রত্যাশী ছিলেন বলে জানা গেছে।