১৯শে জুন, ২০২৫

‘ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী’ ইমরানের গ্রেফতারের পরও আতঙ্ক কাটছে না চন্দ্রগঞ্জবাসীর

শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ইমরাত। ৯ মামলায় এজাহারভুক্ত এই আসামি চাঁদাবাজি করতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। এরপরও আতঙ্ক কাটছে না চন্দ্রগঞ্জবাসীর। যেকোনো সময় জামিনে বেরিয়ে আরো ভয়ঙ্কর রূপে ফিরতে পারেন। তার পেছনে আছেন “বাবা জহির” নামের এক ব্যক্তি। যিনি কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে ইমরানের জামিনের ব্যবস্থা করছেন বলে জানা গেছে।

সন্ত্রাসী ইমরান চন্দ্রগঞ্জ ইউপির দেওপাড়া গ্রামের কড়িম উদ্দিন মোল্লা পুরাতন বাড়ির তাজুল ইসলাম সুমনের ছেলে। ইমরানের বাবার মূল বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার চাটখিলে। দেওপাড়া তার নানার বাড়ি। সে চন্দ্রগঞ্জের আলোচিত ডাকাত নাছিরের ভাগিনা।

জানা যায়, চাঁদাবাজি করতে গেলে টহল পুলিশ ইমরানকে গ্রেফতার করে। তার নামে অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদক সহ মোট ৯টি মামলা ও একাধিক গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।

এছাড়াও গত ২৮ এপ্রিল নোয়াখালীর ছয়ানী ইউনিয়নের গঙ্গাবর বাজারে শাকিল হত্যাকান্ডেও তার উপস্থিতি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় মর্মে তথ্য পাওয়া যায়।

ইমরান গত ৫ আগষ্টের পর থেকে চন্দ্রগঞ্জ বাজার ও আশেপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ, চুরি-ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। তার কারনে চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারের অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। তার মামা মাসুদ ও তার বাবা তাজুল ইসলাম সুমনের অত্যাচারেও এলাকাবাসী নিরুপায়।

স্থানীয়রা প্রকাশ্যে ইমরানের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তথ্য দিলে তাদের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে ইমরান এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করেছে, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। লোকাল থানায় এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ এলেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে জনগণের আস্থা কমে গেছে। তাই তারা চান, বিষয়টি উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সরাসরি নজরদারিতে নেওয়া হোক, যেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পায় এবং এলাকাবাসী নিরাপদে বাঁচতে পারে।

কুখ্যাত সন্ত্রাসীর পেছনে অর্থসাহায্যকারী “বাবা জহির” – তদন্তের দাবি জনগণের এবং ইমরানের ফাঁসির রায় আশা করছেন এলাকাবাসী। চন্দ্রগঞ্জের এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী খুব শিগগিরই আবার জামিনে বেরিয়ে আসতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তার পেছনে অন্যতম বড় অর্থসাহায্যকারী হিসেবে উঠে এসেছে “বাবা জহির” বা “মাটি জহির” নামের এক ব্যক্তির নাম, যিনি কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইমরানকে জামিনে করিয়ে আনবেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রশাসনের উচিত এই “বাবা জহির” নামক ব্যক্তির অর্থের উৎস তদন্ত করা এবং কী কারণে তিনি একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীর ইমরানের পক্ষে এতো বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করছেন—তা খতিয়ে দেখা।

প্রশ্ন থেকে যায়, একজন ব্যক্তি কেন একজন সন্ত্রাসীকে ‘সেলটার’ দিচ্ছেন? প্রশাসনের হাতে এমন তথ্য থাকা উচিত যা থেকে পুরো নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলা সম্ভব।

সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী জামিনে বেরিয়ে এলে আবারও অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং সহিংসতায় জড়িয়ে পড়বে—এমন আশঙ্কা জনমনে প্রবল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এখনো পর্যন্ত চন্দ্রগঞ্জ থানা ওই সন্ত্রাসীকে কেন্দ্র করে গ্যাংটির মূল সদস্যদের ধরতে দৃশ্যত কোনো বড় ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা, না কি ইচ্ছাকৃত গাফিলতি—এই প্রশ্নের উত্তর চায় সাধারণ জনগণ।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন