১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

১৩ বছর আগে গুম হওয়া সিরাজের সন্তানের আকুতি—‘বাবার শেষ চিহ্নটুকু ফিরিয়ে দিন, সেটা নিয়েই বাঁচব’

শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ১৩ নম্বর লেলাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শহিদুল আলম সিরাজ। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১২ সালের ৬ মার্চ বিএনপির ঘোষিত ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে গুমের শিকার হন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তার হদিস পাননি পরিবার। প্রশাসন থেকে শুরু করে সব জায়গায় খুঁজেছেন পরিবার, কোথায়ও পাওয়া যায়নি। গুমের ১৩ বছর পরও জীবিত বা মৃত; শহিদুল আলম সিরাজের শেষ অবস্থান জানতে চান পরিবার।

আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ.এস.এম. শহিদুল আলম সিরাজের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তাঁর সন্তান সাংবাদিক আজীম অনন এবং তার সহকর্মীরা।

আজীম অনন বলেন, ১৩ বছর ধরে আমার বাবা ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো পরিবার। অন্তত আমার বাবার শেষ অবস্থানটুকু জানতে চাই। তিনি জীবিত নাকি মৃত। মৃত হলে বাবার শেষ চিহ্নটুকু ফিরিয়ে দিন; সেটি নিয়েই সারাজীবন বেঁচে থাকবো।

তিনি আরো বলেন, ২০১২ সালে ৬ মার্চ বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য ঢাকা গিয়েছিলেন আমার বাবা। সেই থেকে আর ফিরেননি তিনি। গুম হওয়ার পর থেকে আমরা প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরেও কোন সন্ধান মেলেনি। ১২ বছর ধরে আমার মা ও ছোট ভাই আমার বাবা ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।

সাংবাদিক ইমরান এমির পরিচালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে করতে গিয়ে গুম হয়েছেন সিরাজ চেয়ারম্যান। অনন ছোট ছিল তখন, এখন সে তাঁর বাবার সন্ধানে আবারো মাঠে নেমেছে। বোয়ালখালীর বাঁচা চেয়ারম্যানসহ অনেকে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে তারা গুম হয়েছেন। আমরা বিগত দিনেও সোচ্চার ছিলাম, এখনো আছি। আমরা মামলা, হামলা জেলে গিয়েও ফ্যাসিবাদের রক্তচক্ষুকে আমরা ভয় করিনি। সাহসের সাথে গত ১৭ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। গুমের বিষয় নিয়ে রাষ্ট্রের একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যারা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে গুম হয়েছেন তাদের সর্বশেষ অবস্থানটুকু জানানো দরকার।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ‘অন্তর্বর্তীকালীন’ কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) শওকত আজম খাজা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, জামাল খান ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল সালাম নিষাদ, সাংবাদিক ওয়াহিদ জামান, হাসান মুকুল, মোহাম্মদ আলী, ফারুক মুনির, মির্জা ইমতিয়াজ শাওন, জীবন মুছা, অ্যাডভোকেট নাজমুল হাসান, জামিল উদ্দীন রায়পুরী এবং নগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সৌরভ প্রিয় পাল।

এছাড়াও সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ইদ্রিস মিয়া, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও বেসরকারি কারা পরিদর্শক মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম মহানগর জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মানুরুর রশিদ শিপন, যুবদল নেতা আলাউদ্দীন, জহিরুল ইসলাম জহির, আজম খান, আব্বাস উদ্দিন, মাঈনুদ্দীন খান রাজীব, কামরুল ইসলাম কুতুবী, সাংবাদিক সুজিত সাহা, মিয়া মো. আরিফ, এম এ হোসাইন, এম এ কাউসার, জালাল রুমী, শুভ্রজিৎ বড়ুয়া, শ্যামল নন্দী, ফরহাদ সুমন, মো. সাহাব উদ্দীন, শাহরুখ শায়েল, মিনহাজ মুহী, রিমন শাখাওয়াত, সিরাত মঞ্জুর, তানভীর আহমেদ, ইসমাঈল ইমন, ফয়সাল এলাহী, মো. হানিফ, মনির হাসান, হেলাল উদ্দীন পীর, তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন