৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫

চসিকের কাপাসগোলা জোনে ইপিআই ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার কার্যক্রমে দুর্নীতি

‘টিকাবাণিজ্যের’ তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিককে হুমকি, চসিকের ৩ স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রত্যাহার

শেয়ার করুন

‘আপনার মতো কয়েকজন সাংবাদিক আমার পকেটে থাকে। যাই লেখেন না কেন, আমাদের কিছুই করতে পারবেন না। আমাদের বিরুদ্ধে লিখলে আপনাকে দেখে নেব।’

গত ২৪ নভেম্বর (রোববার) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এই প্রতিবেদককে ফোন করে এসব ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কাপাসগোলা জোনের ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মী কোহিনুর আক্তার।

জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইপিআই এবং জরায়ুমুখ ক্যান্সার টিকা কর্মসূচির আওতায় কাপাসগোলা জোনের ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকর্মী কোহিনুর আক্তার ও কান্তা দাসের পারষ্পরিক সহযোগিতায় ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছিল। টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে এই দুই স্বাস্থ্যকর্মীর যোগসাজসে চসিকের নির্ধারিত ফি ১০ টাকার পরিবর্তে যাতায়াত, ট্যালি শিট প্রস্তুত এবং ফটোকপির নামে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে আদায় করতো ১০০ থেকে ২০০ টাকা।

মহানগর নিউজে ‘চসিকের কাপাসগোলা জোনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে দুর্নীতি ও অনিয়ম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমাম হোসেন রানার নজরে আসে। পরবর্তীতে চসিকের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রফিকের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টির সত্যতা পান। এরই পরীপ্রেক্ষিতে অনিয়ম-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত দুই স্বাস্থ্যকর্মী কোহিনুর আক্তার ও কান্তা দাসকে ৫ নং মোহরা ওয়ার্ড থেকে প্রত্যাহার করে অন্যত্র বদলি করা হয়।

এ সময় একই ওয়ার্ডে কর্মরত অপর এক স্বাস্থ্যকর্মী ফাতেমা বেগমকেও প্রত্যাহার করা হয়। যদিও মহানগর নিউজের ওই প্রতিবেদনে ফাতেমা বেগমকে অভিযুক্ত করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, কোহিনুর আক্তার ও কান্তা দাসের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দিয়েও সুপারিশ করান। শুধু তাই নয়, কাপাসগোলা জোনের স্বাস্থ্যকর্মীদের গ্রুপ লিডার হিসেবে কর্মরত হামিদা আক্তারও এই প্রতিবেদককে বারংবার ফোন করেন এবং ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ড কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত কোহিনুর আক্তার ও কান্তা দাস তার নিজের লোক বলে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযুক্ত ২ স্বাস্থ্যকর্মীর পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান চসিকের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রফিক বলেন, আমরা তদন্ত করে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেছি। সে মোতাবেক তাদেরকে ৫ নং মোহরা ওয়ার্ড থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

মহানগর নিউজ/এআই

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন