চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইপিআই এবং জরায়ুমুখ ক্যান্সার টিকা কর্মসূচির আওতায় কাপাসগোলা জোনের ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে, যেন দেখার কেউ নেই। টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে চসিকের নির্ধারিত ফি ১০ টাকা হলেও নাস্তা, যাতায়াত, ট্যালি শিট প্রস্তুত এবং ফটোকপির নামে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা।
গত ৬ নভেম্বর (বুধবার) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডে ইপিআই ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার টিকা কার্যক্রম চলাকালীন মোহরা ওয়ার্ড কার্যালয়, সাফা মোতালেব হাসপাতাল এবং সিডিএ গার্লস স্কুল ক্যাম্পে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এই প্রতিবেদক।
এদিন সকাল ১১টার সময় ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডে ইপিআই কার্যক্রমে বাচ্চার টিকা নিতে আসেন নাবিলা আক্তার (ছদ্মনাম)। বাচ্চার টিকা প্রদান শেষ হওয়ার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই অভিভাবক চট্টগ্রাম সমাচারকে জানান, আমার বড় ছেলের ৬ বছর। গত ৫ বছর টিকা ফি ৬০ থেকে ৭০ টাকা দিয়ে আসছি। এবার আমার ছোট সন্তানকে টিকা দিতে এসেছিলাম। আমার কাছ থেকে ১৫০ টাকা দাবি করেছে। আমি ১০০ টাকা দিয়ে চলে আসছি।
একই অভিযোগ করেন বাচ্চার টিকা দিতে আসা আরও এক সেবাগ্রহীতা। তিনিও বলেন, আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়েছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মী কৌহিনুর আক্তার এবং কান্তা দাশের কাছে জানতে চাইলে তারা চট্টগ্রাম সমাচারের কাছে প্রথমে অস্বীকার করে বলেন, আমরা সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত ফি ১০ টাকাই নিচ্ছি।

পরে ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়টি দেখানো হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, এখানে আমাদের বিভিন্ন খরচ আছে। আমাদেরকে নাস্তা, যাতায়াত খরচ দেওয়া হয়না। এখানে যে টালি ও ফটোকপি বাবদ যেসব খরচ হয় সেগুলোও দেওয়া হয় না। বিষয়টি স্যারদের জানালে তারা বলেছেন ‘ম্যানেজ’ করে নিতে। তাই ২০/৩০ টাকা নিয়ে থাকি।
কিন্তু, সেবাগ্রহীতা প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা নিচ্ছেন, এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অস্বীকার করে বলেন, আমরা কারও কাছ থেকে এতটাকা নেই না। তবে, অনেকেই খুশি করে ৫০ টাকা ১০০ টাকা দেন।
কৌহিনুর আক্তার ও কান্তা দাসের এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমাম হোসেন রানা দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।