১৪ই মার্চ, ২০২৫

এমইএস কলেজে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের বাধা, ছাত্রদল বলছে তারা ছাত্রলীগের ‘পেতাত্মা’

শেয়ার করুন

ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম নগরীর ওমরগনি এমইএস কলেজে ব্যানার টাঙ্গিয়ে লিফলেট বিতরণ করার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাধার সম্মুখিন হয়েছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় দুপক্ষের হাতাহাতি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দুজন আহত হয়েছেন।

এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই কলেজে লিফলেট বিতরণ করতে গেছেন বলে দাবি করেছেন নগর ছাত্রদলের নেতারা। তাদের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীর আড়ালে তারা মূলত ছাত্রলীগ।

অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যানার টাঙ্গিয়ে লিফলেট বিতরণ করার কথা ছিল না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করার কথা বলে অনুমতি নিয়েছিল ছাত্রদল। শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে উল্টো মারধর করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

যদিও কলেজে ছাত্রদলের কর্মসূচির কোনো অনুমতি ছিল কি না সেই বিষয়ে মুখ খুলছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যানার না টাঙিয়ে শুধুই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করবে জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন কলেজ সমন্বয়ককে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতার আগমনের বিষয়টি জানায় নগর ছাত্রদল। কলেজে যাওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অলিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। আজ সোমবার বেলা ১১ টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নগর ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ব্যানার টাঙ্গিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার লিফলেট প্রচারণা শুরু করে। এ সময় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ উল্লেখ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কয়েকজন তাদের বাধা দেয়। এ সময় ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে তাদের কথাকাটি-হাতাহাতি হয়। এতে উভয়পক্ষের দুজন আহত হয়েছে। কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে দুই পক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে, কে বা কারা ককটেলটি বিস্ফোরণ ঘটায় তা জানা যায়নি।

কলেজের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় কলেজে কোনো দলীয় ব্যানার টাঙানো এবং লিফলেট বিতরণ করা যাবে না বলায় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চড়াও হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে তারা গোলাগুলি করে এবং মারধর করে। আমাদের কয়েকজনকে হুমকি দিচ্ছে মেরে ফেলবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন বলেন, আমাদের কর্মসূচির কথা অধ্যক্ষসহ সব শিক্ষকরা অবগত। লিফলেট বিতরণের কথাও জানিয়েছিলাম। আসলে সাধারণ শিক্ষার্থী না, ছাত্রলীগের কিছু প্রেতাত্মা আছে, তারাই বিভিন্ন রকম ঝামেলা করার চেষ্টা করেছে।

মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হুমকি দেওয়ার মতো তেমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবেই সেখানে যাওয়া হয়েছে জানিয়ে ছাত্রদলের এ নেতা বলেন, এটা আমাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। আমরা তো কলেজে মিটিং-মিছিল করতে যাইনি; শুধু লিফলেট দিতে গিয়েছি। এখানে আমাদের সাংগঠনিক কোনো কর্মকাণ্ড নেই।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ছাত্রদলের তিন কেন্দ্রীয় নেতা স্থানীয় ছাত্রদল নেতাসহ কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে রাজনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে উভয়পক্ষের দুইজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন