গত আগস্টে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজের ভাগনি ও ভাগনি জামাইকে শেষ হওয়া প্রকল্পের চাকরিতে বহাল রেখে বেতন-ভাতা পরিশোধের অভিযোগ উঠেছিল চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি একেএম ফজলুল্লাহ’র বিরুদ্ধে। তখন এ অভিযোগের অডিট আপত্তি দিয়েছিল স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অডিট অধিদফতর। যা প্রকল্পের ডিপিপি/আরডিপিপির আদেশের লঙ্ঘন বলেছিল মন্ত্রণালয়টি। শুধু তাই নয়, সহকারী মিটার পরিদর্শক পদে দায়িত্বে থাকা দুই আত্মীয় রাবেয়া বেগম ও নুর নাহারকে মিটার পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ারও অভিযোগ আছে।
এবার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজের একক ক্ষমতায় দুই আত্মীয়কে পদোন্নতি দেয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এনিয়ে ওয়াসা সচিবের আপত্তি জানালেও একক ক্ষমতায় তাদের এ দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করেন এমডি। তারা হলেন- রাজস্ব তত্ত্বাবধায়ক পদে থাকা মো. সালাহউদ্দিন এবং আয়েশা হোসেন।
ওয়াসার প্রবিধানমালা-২০২১ অনুযায়ী, রাজস্ব কর্মকর্তা পদোন্নতির ক্ষেত্রে রাজস্ব তত্ত্বাবধায়ক বা হিসাবরক্ষক পদে ন্যূনতম সাত বছর চাকরি করতে হবে। যেখানে ওই দুই কর্মকর্তার চাকরির বয়স ছয় বছরেরও কম সময়।

অন্যদিকে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিধি-১ শাখার ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিলের স্মারক অনুযায়ী, চলতি দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে পদোন্নতির জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত গ্রেডেশন তালিকা যথাযথভাবে অনুসরণ করা এবং এই ক্ষেত্রে চাকরি সন্তোষজনক থাকলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে কনিষ্ঠ কর্মকর্তাকে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না।
ওয়াসা সুত্র জানায়, চলতি দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা মানার কথা থাকলেও পদোন্নতির তালিকায় থাকা ১২ জনের মধ্যে ১১তম আয়েশা ও ১২তম সালাহউদ্দিনের সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আয়েশা হোসেন ও মো. সালাহউদ্দিন দুইজনই সম্পর্কে এমডির আত্মীয়। গত ২৫ আগস্ট ওয়াসা সচিব শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে রাজস্ব তত্ত্বাবধায়ক সালাহউদ্দিন এবং আয়েশা হোসেনকে চলতি দায়িত্ব হিসেবে রাজস্ব কর্মকর্তার দায়িত্ব দিয়ে সুপারিশ করা হয়। যদিও এর আগে ২১ আগস্ট তিনিই (ওয়াসা সচিব) এক চিঠিতে তাদের চলতি দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন। তবে সচিবের দ্বিমত থাকার পরও ওই দুইজনকে দায়িত্ব দিতে এমডি লিখিতভাবে সুপারিশ করেন চিঠিতে।
এর আগে ৪ মার্চ ওয়াসার উপ সচিব নাজিম উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই দুই কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে রাজস্ব কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) মো. আশরাফ হোসেন নতুন এসেছেন উল্লেখ করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে কারণ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি তার মনে নেই বলে এড়িয়ে গিয়ে ফোন কেটে দেন।
