চট্টগ্রাম নগরীতে সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. ইউসুফ (৩৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় ঘটনার প্রায় আট মাস পর হত্যা মামলা দায়ের করেছে পরিবার। মামলায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৫ জনকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং থানায় নিহত ইউসুফের বাবা মো. ইউনুচ মামলাটি দায়ের করেন। তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ধলই ইউনিয়নের জলই কোম্পানির বাড়ির বাসিন্দা।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউসুফ বাদীর দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম সন্তান। তিনি চট্টগ্রাম শহরের ঝর্ণাপাড়া আইস ফ্যাক্টরি সড়কের একটি বরফ কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বরফ সরবরাহ করতে দেওয়ানহাট এলাকায় গেলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নেওয়া হলে তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, দেওয়ানহাট মোড়ে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়, সাবেক শিক্ষামন্ত্রীসহ ১ থেকে ৪ নম্বর আসামির নির্দেশে বাকি আসামিরা দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ হামলা চালায় এবং এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে, যার একটিতে ইউসুফের মৃত্যু হয়।
মামলায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, তৌফিক আহম্মেদ চৌধুরী, আরশাদুল আলম বাচ্চু, জাফর আলম চৌধুরী, আবদুস সবুর লিটন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম এবং ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল টিপু।
মামলার বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলের পর দেওয়ানহাট মোড়ে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনার আট মাস পর নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”