২৪ বছরের তরুণী রিয়া মজুমদার। পরিবারে ভাই নেই। দুই বোন আর মা-বাবার সংসার। বড় বোনের বিয়ে হলেও গত বছরের ২৭ অক্টোবর তার স্বামী মারা যান। এখন সংসারের সব চাপ এসে পড়েছে রিয়ার ওপর। সেই সংসারের হাল ধরতে চাকরি নেন গোলন্ডস্যান্ডন নামের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানে। পাশাপাশি চলছিল স্নাতকোত্তরের লেখাপড়াও। কিন্তু, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, মা-বাবা এবং বোনের মুখে হাসি ফোটাবার আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকায় বাস চাপায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয় রিয়ার।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে নগরের বলুয়ার দীঘি মহাশ্মশানে রিয়ার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মা মমতা ও বাবা সুনীল মজুমদার কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন। তাঁরা বারবার বলছিলেন, সংসারের হাল ধরতে নিজের কাঁধে দায়িত্ব নিয়েছিল, শুধু মাত্র আমাদের একটু সুখে রাখার জন্য। কিন্তু সেই সুখ আর রইল না। আদরের মেয়েটাই চলে গেল আমাদের ছেড়ে।

রিয়ার মা-বাবা জানান, খুলশীতে ছিল রিয়ার অফিস। সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হওয়ার আগে মাকে ফোন করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন মায়ের দাঁতের ব্যথা কমেছে কি না। মায়ের জন্য ওষুধ নিয়ে জামালখানের বাসায় ফেরার কথা ছিল তার। তবে ওষুধ নিয়ে আর বাসায় ফেরা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছেন, খুলশী থেকে ৭ নম্বর রুটের একটি বাসে রিয়া ইস্পাহানি মোড়ে নামেন। তখন পেছন থেকে অপর একটি বাস তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে, তবে চালক পালিয়ে গেছেন। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া সৎকার করা হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।