১৪ই মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামে পুলিশের কারসাজি— বিস্ফোরক মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতাকে আদালতে তোলা মাত্রই জামিন!

শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছাত্রলীগ নেতা মো. এনামুল হক এনাম (৩২)। সাতকানিয়া থানায় বিস্ফোরক এবং দণ্ডবিধি আইনে দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। পুলিশ তাকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো ছাড়াই আদালতে সোপর্দ করেছে। ফলে, ছাত্রলীগ নেতা এনাম নিরাপরাধ বেশে জামিনে মুক্তি পেয়ে যায়। কিন্তু, একই মামলায় গ্রেফতার অন্য আসামি জহির আহমদকে (৪২) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, অনৈতিক লেনদেন করায় আসামি এনামুলকে বেআইনি প্রক্রিয়ায় চালান দেওয়া হয়েছে। আর অনৈতিক লেনদেন না করায় আসামি জহিরকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। যদিও বেআইনি প্রক্রিয়ায় চালানের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এমনটি করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ আসনে নির্বাচন করেছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) অলি আহমদ। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী সাইক্লোন সেন্টার এলাকায় ছাতা প্রতীকের পক্ষে কর্নেল অলির ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক সানির নেতৃত্বে নির্বাচন প্রচারণা চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এলডিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশ মামলা না নিলেও গত ৫ আগস্ট আ.লীগের পতন হলে আহত ভুক্তভোগীরা সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ২০ আগস্ট মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়। এতে ৩৪ নম্বর আসামি করা হয় কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কেঁওচিয়া আহমদ হোসেন সিকদার ছেলে মো. এনামুল হক এনামকে এবং ৩৬ নম্বর আসামি করা হয় একই ইউনিয়নের মাইজ পাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহির আহমদকে (৪২)।

গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে কেঁওচিয়া ২ নম্বর ব্রিজ এলাকা থেকে আসামি এনামকে গ্রেফতার করে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। পরদিন (রোববার) কেঁওচিয়া ইউনিয়নের কেরানিহাট বাজার থেকে জহির আহমদকে গ্রেফতার করা হয়।

এরপর এনামকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো ছাড়াই ফৌজদারি কার্যবিধি ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হবে। এর ফলে এনামকে আদালতে তোলা হলে সঙ্গে সঙ্গেই নিরপরাধ হিসেবে জামিন হয়ে যায়। আরেক আসামি জহিরকে সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি দুজনকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে প্রেরণ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন যোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে জানতে পারেন।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আ. মুন্নাফ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এমনটি করা হয়েছে। অনৈতিক লেনদেনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রকম হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন