১৪ই মার্চ, ২০২৫

দেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং-এ প্রতিদিন লেনদেন সাড়ে ৫ হাজার কোটি

শেয়ার করুন

দেশে মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) সেবার মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এই রেকর্ডটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তৈরি হয়েছে, যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে তথ্যটি উঠে আসে।

এমএফএস খাতের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন সেবা সংযোজন এবং উদ্যোক্তা এজেন্টদের মাধ্যমে গ্রাহক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে লেনদেনের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একক মাস বা একদিনের হিসাবে এই লেনদেন আর কোনো মাসে হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ডিসেম্বরে মোবাইলে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যার প্রতিদিনের গড় ছিল ৫ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এটি দেশটির মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) চালুর পর একক মাস বা একদিনের হিসাবের সর্বোচ্চ পরিমাণ। আগের মাসে, নভেম্বর ২০২৪ সালে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল এতদিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ। এর আগের মাসগুলোতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেনদেন হয়েছে—অক্টোবর মাসে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা, আগস্টে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং জুলাইয়ে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুধুমাত্র টাকা পাঠানো পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান এবং প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে এটি এখন অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। এসব সেবার মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নেও অবদান রাখছে।

এমএফএস সেবার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় গত ২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা, মার্চে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা, এপ্রিল ও মে মাসে যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা এবং ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১শে মার্চ, যখন বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এই সেবা চালু করে। পরবর্তীতে সেবাটির নাম পরিবর্তন করে রকেট রাখা হয়। এর কিছুদিন পর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশও এই সেবা চালু করে। বর্তমানে, বিকাশ, রকেট, মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। এছাড়া, ডাক বিভাগের নগদও এই সেবা চালু করেছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এই বিস্তৃতির ফলে দেশের আর্থিক সেবাগুলো আরও সহজলভ্য হয়েছে, এবং এটি ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন