ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে দুপুর ২টা থেকে সারাদেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা। ফলে সব হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ শাটডাউনের কারণে রোগীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এর ধারাবাহিকতায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরাও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। একইসাথে বন্ধ হয়ে গেছে জরুরী বিভাগের সেবা কার্যক্রম। তবে, নার্সরা ওয়ার্ডে রোগী সামাল দিচ্ছেন।
একটি সূত্রে জানা গেছে, কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণার আগে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. তছলিম উদ্দিন খান। অন্তত দুই ঘণ্টা বৈঠক করেও চিকিৎসকদের বোঝানোর চেষ্টায় তিনি ব্যর্থ হন।

এর আগে দুপুর পৌনে একটার সময় ঢামেকের প্রশাসনিক গেটে নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. আবদুল আহাদ কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দুইবার ইনসিডেন্ট ঘটেছে, সেখানে আমাদের চিকিৎসকরা নিজের জীবন বাজি রেখে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়েছেন। এমনকি নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়েছেন, খাবার দিয়েছেন। আমরা বাংলাদেশের ডাক্তাররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটা অংশ। গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে, নিউরোসার্জারির অপারেশন থিয়েটার থেকে রোগীর লোক এক ডাক্তারকে বের করে এনে মারধর করে। শুধু তাই নয়, মারতে মারতে ২০০/৩০০ মিটার দূরে পরিচালকের রুমে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, গত রাতে আরও দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। বাইরে এক গ্রুপ এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। সেই গ্রুপ চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেলে আসে। তখন বিপক্ষ গ্রুপ ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসা নিতে আসা গ্রুপকে আবার মারধর করে। তাহলে যেখানে রোগীও নিরাপদ না, সেখানে চিকিৎসকরা কেমন করে নিরাপদ থাকবেন? কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগের ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারে (ওসেক) এক যুবকের মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে দায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্সদের ওপর হামলা হয়, ইমার্জেন্সিতে ভাঙচুর করে। আমরা দেখতে পাই ডাক্তার ও রোগী কেউ নিরাপদ নয়।
এ চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালের পরিচালকের অনুরোধে রাত ১১টার পরে আমরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাই। রাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। কিন্তু কোনো সিকিউরিটি আমরা দেখতে পাইনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য কর্মবিরতি করছি। সারা বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল বন্ধ থাকবে।