চান্দগাঁওয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামি বশরের প্রকাশ্য চাঁদাবাজি, নিরব ভূমিকায় পুলিশ

শেয়ার করুন

‘গাড়িপ্রতি ১০০০ টাকা দিতে হবে, না হয় আগামীকালকেই তোর গাড়ি ‘টু’ করে দেব। ১০০০ টাকা করে না দিলে গাড়ি চালাতে পারবি না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি অটো টেম্পু চালককে প্রকাশ্যে এ হুমকি দিয়েছেন চান্দগাঁও রাস্তার মাথা এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ মো. বাশার প্রকাশ বশর। গাড়ি আটক বা টু হওয়ার ভয়ে অটো টেম্পু চালকরা তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না।

গত ১৭ মার্চ চান্দগাঁও থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনের নামে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে (মামলা নম্বর- ২৬)। বশর সেই মামলার ৯ নম্বর এজাহার ভুক্ত আসামি। মামলা মাথায় নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি চালিয়ে গেলেও পুলিশের দাবি, বশরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে মামলার বাদি মোহাম্মদ লোকমানের দাবি, প্রথম থেকেই এজাহার ভুক্ত আসামি বিপ্লব বড়ুয়া, রাসেল, আলমঙ্গীর, জুয়েলসহ তাদের সহযোগিরা আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বারবার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি এখন আতঙ্কিত বোধ করছি। যেকোনো মুহূর্তে আমাদের ওপর হামলা হতে পারে। নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় অভিযোগও দায়ের করেছি। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

জানা গেছে, বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগো পাড়া এবং শাকপুরা মিলিটারি পোল থেকে যেসব সিএনজি অটো টেম্পু কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা গাড়িগুলোকে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয় অভিযুক্ত বশরকে। যেসব গাড়ি নির্ধারিত এই চাঁদা দিতে রাজি হয় না সেগুলোকে ট্রাফিক পুলিশ দ্বারা আটক বা ‘টু’ করে জরিমানা করা হয়। শুধু তাই নয়, কোন কোন চালককে রাস্তায় গাড়ি চালাতে দেবে না বলেও হুমকি দেয়।

এই রুটের অনেক অটো টেম্পু চালকের অভিযোগ, বশর একেকদিন একেক চালককে টার্গেট করে সকাল-বিকাল নাস্তা বাবদ দেড়শ থেকে দুইশ টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক আদায় করে। কোন কোন সময় চালকদের দোকানে ডেকে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ভরপুর নাস্তা করে নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটো টেম্পু চালক বলেন, বোয়ালখালী থেকে যতবারই কাপ্তাই রাস্তার মাথা আসি ততবারই এই বশরকে একশ থেকে দেড়শ টাকার নাস্তা খাওয়াতে হয়। না হয় তার লোকজন দিয়ে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে।

জানা গেছে, অটো টেম্পু চালক জাহেদ, ইয়াছিন, ওয়াহিদ এবং জিসানসহ কয়েকজন চাঁদাবাজ বাশারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে।

এজাহার ভুক্ত আসামি কিভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফয়সাল জানান, মামলার এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন ইতোমধ্যে আমরা গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। গ্রেফতার করা যায়নি এমন অন্যদের মতো বশরকেও আমরা খুঁজে বেড়াচ্ছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে খুব শিগগির তাকে আইনের আওতায় আনতে পারব।

প্রসঙ্গত, বশর নিজেও সিএনজি অটোটেম্পু চালক। চাঁদাবাজি, সুদব্যবসা এবং নানা অপকর্ম করে ফুলেপেঁপে উঠেছেন। এখন অটো টেম্পু চালনা ছেড়ে পুরোপুরি চাঁদাবাজি করে থাকে। তার গ্রামের বাড়ি পটিয়ায় হলেও বর্তমানে চান্দগাঁও থানার মৌলভী পুকুর পাড়ের গাবতলা নামক এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। কিন্তু, তাকে সবসময় কাজীরহাট এবং রাস্তার মাথা এলাকায় দেখা যায়।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন