ক্রিকেট খেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব, রাহাতকে ফুঁসলিয়ে বেড়িবাঁধে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করল ৪ বন্ধু!

শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁওয়ের সানোয়ারা বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তপ শ্রেণির ছাত্র রাহাত খান (১২)। একজন ক্ষুদে ক্রিকেটার। ২ মাস আগে ক্রিকেট খেলা নিয়ে সহপাঠি এক বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল। সেই ঝগড়া সেদিনই মিটে গিয়েছিল। কিন্তু, দীর্ঘ দুই মাস পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ নিখোঁজ হয় রাহাত।

জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো সকাল বেলা রাহাতের খানকে স্কুলে দিয়ে যায় তার মা। দুপুর দুইটার নিতে এসে বাবা লিয়াকত আলী রাহাতকে স্কুলে পাননি। শিক্ষকদের কাছে জানতে পারেন ১১টার দিকে কিছু শিক্ষার্থীর ছুটি হয়ে গেছে, সম্ভবত তারা খেলাধূলা করতে গেছে। এ সময় শিক্ষকরা লিয়াকত আলীকে ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করতে বলেন। লিয়াকত আলী স্কুলে ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করেও রাহাতের দেখা না মেলায় চিন্তিত হয়ে পড়েন।

আজ বুধবার সকালে চান্দগাঁও থানার হামিদ চরের বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে রাহাত খানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাহাতের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের কথা প্রাথমিক স্বীকার করেছে। তাঁরা চারজনই রাহাতের বন্ধু। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাহাতের বাবা-মা এবং এলাকাবাসী মূল অভিযুক্তকে রাতে চান্দগাঁও থানায় নিয়ে আসে। মূল অভিযুক্ত প্রথমে অস্বীকার করলে আমরা স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আরো তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে আসি। পরে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। এরপর রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাই। সেখানে আমরা একটি আলামত পেলেও রাহাতের মরদেহ পাইনি। আজকে সকালে ওই একই জায়গায় থেকে আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করি।

পুলিশ আরো জানিয়েছেন, আটক চারজন রাহাতকে আইস্ক্রিম খাইয়ে নদীর পাড়ে খেলাধূলা এবং নদীদে গোসল করার কথা বলে রাহাতকে সেখানে নিয়ে যায়। এরপর দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়। তবে, হত্যাকাণ্ড কিভাবে ঘটিয়েছে তা বিস্তারিত জানাননি পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধারের সময় উপস্থিত একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাহাতের শরীরে কোনো জামাকাপড় ছিল না। মুখে আঘাতের চিহ্ন আছে, অন্ডকোষ একটি ছিঁড়ে ফেলেছে এবং পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এসব দেখে এটাকে হত্যাকাণ্ডই মনে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পাঁচলাইশ জোনের এসি আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, চারবন্ধু মিলে হামিদচর এলাকার কর্ণফুলীর পাড়ে ঘুরতে যায়। তারা সেখানে গোসল করে। পাঁচজনের মধ্যে দুইজন সাঁতার জানে না। তাঁরা কর্ণফুলী পাড়ে বসেছিল, বাকি তিনজন নদীর পানিতে গোসল করে। এর মধ্যে দুইজন পাড়ে উঠে গেলেও একজন উঠতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, আসলে ছেলেটাকে ধাক্কা মারছে কিনা সেটা আমরা তদন্ত করছি। তবে আটক চারজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পরও ধাক্কার বিষয়টি নিশ্চিত নই।

মুখে আঘাত, অণ্ডকোষ ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছিল, প্রত্যক্ষদর্শীদের এমন দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, তার গোপনাঙ্গে একটি ছোট্ট আঘাত এবং মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। যদিও এটা চিকিৎসক তদন্ত করে বলতে পারবেন, ঠিক কি কারণে আঘাত এবং রক্ত ঝরছিল।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন