পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছে গ্রেফতার মোহাম্মদ সজিব। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বর্তমানে কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের ডানহাত হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ হাসান। ঘটনার আগে হাসান তার সহযোগীদের নিয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওয়াজেদিয়া কয়লার ঘর এলাকায় দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে এক গোপন বৈঠক করেন। এই বৈঠকে হত্যার বিস্তারিত ছক কষা হয়।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই তথ্য ফাঁস করেছেন ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া আসামি মোহাম্মদ সজিব।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাতে সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া সজিব তার জবানবন্দিতে জানান, হাসানই এই জোড়া খুনের মূল পরিকল্পনাকারী। সজিবের পূর্ব পরিচিত ইমন প্রথমে তাকে এই পরিকল্পনার আভাস দেন। ঘটনার দিন সকালে ইমনের ফোনে সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে আসেন। ইমনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরে তিনি কয়লার ঘর এলাকায় যান।


সেখানে সজিব দেখেন, হাসানসহ আরও সাত-আটজন উপস্থিত। সজিবের ভাষ্যমতে, সেখানেই সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দীর্ঘ বৈঠকে তারা সাজ্জাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত সরোয়ার হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার পেছনে সরোয়ারের হাত রয়েছে। এ ধারণা থেকে সরোয়ারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাত ১২টার পর তারা কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন বালুমহাল এলাকায় যান। সজিব জবানবন্দিতে আরও উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তারই চালানো মোটরসাইকেলের পেছনে অস্ত্র হাতে বসেছিলেন মূল পরিকল্পনাকারী হাসান। মোট সাতটি মোটরসাইকেলে সাত থেকে আটজন অস্ত্রধারী এই হামলায় সরাসরি অংশ নেয়, যাদের অনেককেই তিনি চেনেন না বলে দাবি করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, সজিবের জবানবন্দির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের পূর্বে অক্সিজেন এলাকায় হাসানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। জবানবন্দি থেকে ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এই মামলায় সজীবসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল পরিকল্পনাকারী হাসান এবং পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।