১২ই মার্চ, ২০২৫

জামিনে বেরিয়ে ৮ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকলেন বিএনপি নেতা, ১ কোটি টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগ

শেয়ার করুন

রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অন্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে মালামাল লুটপাটের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিএনপি নেতা কিং আলী। প্রায় দেড় মাস কারাগারে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে আসেন। কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েই ৮ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি।

মামলার অভিযোগে কিং আলী দাবি করেন, প্রথমে ১‌ কোটি টাকা চাঁদাদাবি করেন। তারপর রাতের বেলা উঠে নিয়ে থানায় নির্যাতন করে সকালে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। এরপর কারখানার মালামাল লুটপাট করে পুলিশ।

সূত্রে জানা গেছে, এতে ‘আসামি’ করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা চাঁদাবাজি মামলার বাদী, পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, দুই উপ-পরিদর্শকসহ ৮ জনকে। আদালত আবেদন গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের তৃতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসেনের আদালত।

অভিযুক্তরা হলেন, পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আজাদ, উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক ঘোষ, বন্দর থানার উপপরিদর্শক মো. আসাদুল হক, কিশোর মজুমদার, খাতুনগঞ্জের এস.এস ট্রেডিংয়ের স্বত্ত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক আরিফ মঈনুদ্দিন, উপ-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আমান এবং সুপারভাইজার দিদার হোসেন।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১০ অক্টোবর বন্দর থনার জিএইচ এন্টারপ্রাইজ থেকে ২০ হাজার টন পাথর কিনে ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করে বাদী পাহাড়তলীর টল রোডের কিং আলী গ্রুপের ডিপোতে এনে রাখে। একইবছরের ১৭ অক্টোবর আসামিরা ডিপোর কার্যক্রমে বাধা দেয়। প্রতিবাদ করলে পাহাড়তলী থানার এসআই মানিক ঘোষ ওসির সাথে দেখা করতে বলে। সন্ধ্যায় বাদী ওসির কাছে গেলে পাথর ক্রয়ের রশিদ ও বাদীর সকল জায়গার মূল্য ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে ১ শতাংশ অর্থাৎ এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু বাদী অসম্মতি জানিয়ে থানা ত্যাগ করেন।

ওইদিন রাত ১০টার দিকে এসআই মানিক ঘোষ অতি দ্রুত থানায় গিয়ে চাঁদার টাকা দিতে বলে। একইসাথে বাদীর করা আগের একটি মামলা থেকে হালিশহর থানার সাবেক ওসি প্রণব চৌধুরীর নাম বাদ দিতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় বাদীকে থানায় আটকে অজ্ঞাত তিন পুলিশকে দিয়ে মারধর করে। এসময় বাদীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে এবং সারারাত নির্যাতন করায় বাদী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরদিন তাকে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এছাড়া আসামিরা ২৪ অক্টোবর বাদীর ডিপোর সামনে ৩০টি ট্রাক নিয়ে কেয়ারটেকারকে মারধর করে এবং ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার পাথর, মাটি, ১০ লাখ টাকার স্কেলসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নেয়। বাদী ৪৯ দিন হাজতে থাকার পর জামিন পেয়ে ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন। এসময় ওসি বাবুল আজাদের সাথে যোগাযোগ করলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর এবং খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে কথা হয় কিং আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তাদের দাবি, বিভিন্ন সময় কিং আলীর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় পূর্বের ক্ষোভ থেকে মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আজাদ জানান, কিং আলী একাধিক মামলার আসামি। গত বছর পাহাড়তলী এলাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করতে যাওয়ার পর আমরা তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করি। সেই ক্ষোভের কারণে তিনি মামলা করে থাকতে পারেন।

তবে এ প্রসঙ্গে জানতে মামলার বাদী কিং আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি ‘কিছুক্ষণ পর’ ফোন করবেন জানিয়ে আর সাড়া দেননি।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন