পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা সেই জাহাজটি নিয়ে গত নভেম্বর থেকে ভারত-বাংলাদেশে মাতামাতির শেষ নেই। অথচ এর মধ্যে সেই জাহাজটি দ্বিগুণেরও বেশি পণ্য নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। জাহাজটি গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের একদিন পর আজ পৌঁছেছে। তবে, এরই মধ্যে জানা গেছে জাহাজটিতে কি আসলো।
এবার কয়টি কনটেইনার আসল বাংলাদেশে
গত নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথমবার পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজটিতে ৩৭০টি একক কনটেইনার এসেছিল। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আনা হয় ২৯৭ একক কনটেইনার, বাকিগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। এবার আমিরাত ও পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে ৮১১ একক কনটেইনার পণ্য, যার মধ্যে ৮৬ শতাংশই পাকিস্তানের।

এবার কী এলো এবং কারা আনল
এবার জাহাজটিতে মোট ২৮৫ কনটেইনারে ১ লাখ ৪৮ হাজার ২০০ ব্যাগ পরিশোধিত চিনি আনা হয়েছে। পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টন। এই চিনি এনেছে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল, শেহজাদ ফুড প্রোডাক্টস, সেভয় আইসক্রিম কারখানা ও ব্রডওয়ে ইন্টারন্যাশনাল।
চিনির পর পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে ডলোমাইট। ডলোমাইট আমদানি হয়েছে ১৭১ কনটেইনারে। কাচশিল্পে ব্যবহারের জন্য এই কাঁচামাল এনেছে নাসির ফ্লোট গ্লাস ও আকিজ গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ।
পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া আরেকটি পণ্য হলো সোডা অ্যাশ। এই পণ্য আমদানি হয়েছে ১৩৮ কনটেইনারে। শিল্পে ব্যবহারের এই কাঁচামাল এনেছে নাসির ফ্লোট গ্লাসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলো এনেছে কাপড়ের রোল। মোট ৪৬টি কনটেইনারে রয়েছে কাপড়ের রোল। আলু আমদানি হয়েছে ১৮ একক কনটেইনারে। এ ছাড়া জয়পুরহাটের পিঅ্যান্ডপি ট্রেডিং ২০ কনটেইনারে আখের গুড় এনেছে। এসব পণ্যের পাশাপাশি পুরোনো লোহার টুকরা, রেজিন, থ্রি-পিস ইত্যাদি পণ্য আমদানি হয়েছে।

পাকিস্তান ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আনা হয়েছে পণ্য। আমিরাত থেকে আনা হয়েছে খাদ্যপণ্য, খেজুর, লুব অয়েল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। পাকিস্তানের পাশাপাশি আমিরাত থেকেও ১০ কনটেইনার চিনি আমদানি হয়েছে।
জাহাজটির বাংলাদেশে প্রতিনিধি কারা
পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজটি নিয়ে গত নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ-ভারতে বেশ মাতামাতি হচ্ছে। আপনি কি জানেন, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসা জাহাজটির মালিক কে? জাহাজটি পানামার পতাকাবাহী হলেও এটি বর্তমানে দুবাই ভিত্তিক জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ফিডার লাইনস ডিএনসিসির আওতাধীন আছে। অনেকে হয়তো জানেন, জাহাজটির বাংলাদেশি প্রতিনিধি রিজেনসি লাইনস লিমিটেড। কিন্তু এই রিজেনসি লাইনস লিমিটেড কার জানেন? রিজেনসি লাইনস লিমিটেড আওয়ামী লীগের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীর। তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই চলছে এটি।