১৪ই মার্চ, ২০২৫

পৃথিবীজুড়ে সাইফুজ্জামানের রয়েছে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি, আছে ৫০০ বাড়ি! (ভিডিও)

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ

শেয়ার করুন

অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দেশ থেকে মন্ত্রী-এমপি, সরকারি কর্মকর্তা ও নেতারা অন্তত ২ লাখ কোটি টাকা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের রয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকার বিশাল সম্পত্তি। শুধুমাত্র বাড়ি কিনেছেন ৩৬০ টি। আর এই তথ্য উঠে এসেছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।

অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, ব্রিটেন ছাড়াও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত। সবমিলিয়ে তিনি ৫০০টিরও বেশি বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার।

এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের যুক্তরাজ্যে পাচার করা অর্থ আছে কিনা তা জানতে ব্রিটিশ সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার।

জানা গেছে, নতুন সরকার দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সহযোগীদের ওপর কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার অংশ হিসেবে ব্রিটেনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি ভুমিমন্ত্রী হন, তখন এটি আরও বেড়ে যায়।

সাইফুজ্জামান আলজাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি।

তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, বর্তমান প্রশাসন তদন্ত করছে যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে কি না। যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে।

মনসুরের দাবি, যুক্তরাজ্য সরকার তদন্তে সহায়তা করছে। বাংলাদেশের নতুন সরকারের কাছে ব্রিটিশ হাইকমিশনার প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসও ব্রিটিশ সরকারের সহায়তায় পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মুখপাত্র শফিকুল আলম জানিয়েছেন, চুরি হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনাই সরকারের অগ্রাধিকারগুলোর অন্যতম।

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর আইনজীবী আজমালুল হোসেন বলেছেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কিছুই লুকানোর নেই এবং তিনি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। এদিকে, নতুন সরকারের মুখোমুখি হওয়া সাবেক সরকারের আরও অনেক মন্ত্রীও দাবি করেছেন, তারা নির্দোষ এবং তদন্তের মাধ্যমে তা প্রমাণ হবে।

আলজাজিরার ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটে সাইফুজ্জামানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন