১৯শে জুন, ২০২৫

আমি এখন এখানে বক্তব্য রাখছি, একই সময়ে ঢাকায় একটি ষড়যন্ত্র চলছে : চট্টগ্রামে হাসনাত আব্দুল্লাহ

শেয়ার করুন

যখন বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনী রোড ম্যাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাই তখনই ষড়যন্ত্র ও দেশবিরোধী চক্রান্ত মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে। যতই ষড়যন্ত্র হোক, যতই চক্রান্ত হোক না কেন, আপনারা লিখে রাখেন শেখ হাসিনা আর কখনো ফিরে আসবে না।

তিনি আরো বলেন, আমি এখন এখানে বক্তব্য রাখছি, একই সময়ে ঢাকায় একটি ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা যখনই প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল মত পার্থক্যের উর্ধ্বে ওঠে আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে এই সরকারকে আমরা সফল করে তুলবো।

আজ রোববার (২৫ মে) দুপুরে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র পথসভায় এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলা করবেন না। আপনারা নিজেরা নিজেরা মিলে বিকল্পহীন মনে করবেন না। হাসিনা নিজেকে নিজে বিকল্পহীন মনে করতো। আমরা জনগন বিকল্প খুঁজে নিয়েছি। সচিবালয়ে বসে এখনও যারা সরকারকে অসহযোগিতা করছেন আপনাদের বিকল্প আমরা জনগণ ঠিক করে নেব। দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা অনেক উচ্চশিক্ষিত যুবক রয়েছে। প্রয়োজনে তারা আপনাদের স্থলাভিষিক্ত হবে।

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া এই নেতা আরো বলেন, আপনারা যদি মনে করেন হাসিনার রাজত্ব আবার কায়েম হবে তাহলে আপনারা ভুল। আপনারা ষড়যন্ত্র না করে দেশের স্বার্থে বিচার, সংস্কার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। দেশের লুটপাট, গুম, খুনকে বিগত সরকার নাম দিয়েছিল উন্নয়ন। দাড়ি-টুপি ওয়ালা মানুষকে নির্যাতনের নাম দিয়েছিল সংস্কার। যে সরকার পালিয়ে যায় সে সরকার আর কখনো ফিরে আসে না।

গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা গণমাধ্যমকে আহ্বান জানাবো আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন। বিগত সরকার স্বৈরাচারের মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তারা এস আলমের লুটপাটের বৈধতা উৎপাদন করেছিল। আপনারা অপরাধের বৈধতা উৎপাদন করেছিলেন। আপনারা গুম খুনের বৈধতা উৎপাদন করেছিলাম। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা পাচারের বৈধতা উৎপাদন করেছিলেন। এখন তরুণ প্রজন্ম দেশের স্বার্থে দেশরক্ষায় কাজ করবেন।

পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, বাঁশখালী প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর। আপনাদের বাঁশখালীর অনেক কৃতিসন্তান এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তাঁরা আপনাদের পাশে থাকবে। আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ অনেক বাকী। আমরা আজকে আসছি এনসিপির পক্ষে থেকে। এনসিপি নতুন একটি দল। এ দলের স্বপ্ন অনেক বড়। আমাদের দেশের পচা ব্যবস্থা আমরা রাখতে চাই না। যে রাস্ট্র ব্যবস্থায় দেশের মানুষ মারা যাচ্ছে, অন্ধ হচ্ছে, পঙ্গুত্ব বরণ করছে সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমরা আর ফেরত যেতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, যে কোনো সাধারণ নাগরিক ন্যায্য বিচার পাবে। কোন দলীয় বিবেচনায় তার বিচারকার্য ব্যাহত হবে না। নতুন বাংলাদেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কোন পণ্যে পরিণত হবে না। সবার জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত হবে নতুন বাংলাদেশে। রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের স্বার্থে কাজ করে না, সব নিজের স্বার্থে কাজ করে। আমরা সেটা বদলে দিতে চাই। এনসিপি কাজ করবে জনগণের স্বার্থে, এনসিপি কাজ করবে মানুষের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে। এ কাজে আপনারা জনগণ আমাদের সাথে থাকবেন।

দলের যুগ্ম সদস্য সচিব মীর এরশাদুল হক বলেন, দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল শুধুমাত্র নিজের ধান্ধা ফিকির ও পকেট ভারি করতে ব্যস্ত থাকে। দেশের গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থাকার মন মানসিকতা কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলের ভিতর আমরা দেখিনা। আমি ঈদে যখন বাঁশখালী আসি, তখন দেখি আমার উপজেলার লবণ চাষিরা টাকার অভাবে ঈদ করতে পারছে না। লবণের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত। তখন আমি শুধুমাত্র ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে উপজেলা চত্বরে মানববন্ধন করি। এখন কিছুটা হলেও লবণের দাম বেড়েছে। আমি এভাবে আমার উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে থাকতে চাই।

এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য জাওয়াদুল করিমের সঞ্চালনায়, আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ন সদস্য সচিব সুজা উদ্দীন, নাহিদা সরোয়ার নিভা, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, সংগঠক আরমান হোসাইন, আজিজুর রহমান রিজভী, যুগ্ম মূখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ, চট্টগ্রাম অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক হাসান আরিফ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন প্রমূখ।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন