চান্দগাঁওয়ের শীর্ষ চাঁদাবাজ বশর গ্রেফতারের পর কারাগারে, বাদিকে আসামি পক্ষের ‘হত্যার’ হুমকি!

শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চান্দগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি চাঁদাবাজি মামলার অন্যতম আসামি আবুল বশরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর বাদিকে প্রথমে তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং পরে স্থানীয় সাবেক এক কাউন্সিলরের পরিচয় দিয়ে আসামি বশরের পক্ষে কাজী নিজাম উদ্দিন নামের ‘কথিত’ এক সাংবাদিক দেখে নেওয়াসহ হত্যার হুমকি দেন। এমতবস্থায় বাদি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার সময় কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকা থেকে শীর্ষ চাঁদাবাজ আবুল বশরকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার (৯ মে) দুপুর ১২টার সময় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণা করা হয়।

জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ চান্দগাঁও থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনের নামে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মো. লোকমানসহ চারজন। যার মামলা নম্বর- ২৬। বশর সেই মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি। মামলা মাথায় নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি চালিয়ে গেলেও তখন পুলিশ দাবি করেছিল, বশরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, একই সময়ে বশর চান্দগাঁও থানা এলাকায় অবস্থান করছিল এবং আগের মতোই প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি করে আসছিল। পরে এটা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে পুলিশ নড়েচড়ে বসে।

চান্দগাঁও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার হামিদিয়া হোটেলের সামনে চাঁদাবাজি করার সময় অটোটেম্পু চালকরা পুলিশকে খবর দেয়। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার সময় মোহরা পুলিশ বক্সের আইসি কাজী মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ গিয়ে বশরকে হাতেনাতে আটক করে চান্দগাঁও থানায় হস্তান্তর করে।

এদিকে, বশরকে গ্রেফতারের পর মামলার বাদি মো. লোকমানকে বিভিন্ন উপায়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মামলার বাদি মো. লোকমান বলেন, প্রথমে মামলার আইও পরিচয়ে হুমকি-ধমকি দেন, পরে নিজেকে মোহরা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আজম বলে পরিচয় দেন। এরপর তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুই কাজটি ঠিক করিস নাই, তুই বাঁচতে পারবি না’ বলে ফোন রেখে দেন।

তিনি আরও বলেন, পরেরদিন সকালে যাচাই-বাচাই করে দেখি নম্বরটি কাজী নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির। যিনি আসামি বশরের বড় ভাই হিসেবে পরিচিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত কাজী নিজাম উদ্দিন বোয়ালখালী থানার মধ্যম শাকপুরা এলাকার মৃত আব্দুল মাবুদের ছেলে। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বোয়ালখালী-কাপ্তাই রাস্তার মাথা-বহদ্দারহাট রুটের অন্তত অর্ধশতাধিক অটোটেম্পু থেকে মাসিক ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে। আবুল বশর এবং তার বেশ কয়েকজন সহযোগী অটোটেম্পুগুলো দেখভাল করেন।

বিভিন্ন জনের পরিচয় দিয়ে বাদিকে আসামি পক্ষের কাজী নিজাম উদ্দিন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, বাদি অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তসাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন : চান্দগাঁওয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামি বশরের প্রকাশ্য চাঁদাবাজি, নিরব ভূমিকায় পুলিশ

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন