ঘটনা ২০১৮ সালের। পোশাক শ্রমিক সাখাওয়াত হোসেন (২৯) এবং তার স্ত্রী কলমা বেগম চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গার খেজুরতলা এলাকায় মো. সোহেলের ঘরে সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতো। ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় সোহেল তাকে ঘর ছেড়ে দিতে বলে। সে বছরের ১৩ জুন সন্ধ্যায় সাখাওয়াত সোহেলের বাসায় গিয়ে চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে তার চার বছর বয়সী শিশুকন্যা সায়মা আক্তারকে অপহরণ করে। এরপর মুঠোফোনে কল করে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরদিন দুপুরে সোহেল বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ শিশুকন্যা সায়মা আক্তারকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আজ সোমবার (১৭ মার্চ) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শিশুকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলায় মো. সাখাওয়াত হোসেনকে পৃথক ধারায় দুবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই রায়ে তার স্ত্রী মোসাম্মৎ কমলা বেগমকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া সাখাওয়াতের মা-ভাই সহ মোট ৩ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ে আদালত উভয় সাজা একসাথে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করেছেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন—দণ্ডপ্রাপ্ত মো. সাখাওয়াত হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম, তার ভাই জাকির হোসেন এবং কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার বিরলী গ্রামের মো. বশির আহম্মেদ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মামুনুর রশিদ এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলায় মোট পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।