১৩ই মার্চ, ২০২৫

মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ

ঘটনা চট্টগ্রামের— চাহিদা মতো যৌতুক নিয়েও মন না ভরায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুন করল পাষণ্ড স্বামী!

শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাসিন্দা মো. সুমন (৩৫)। ৪ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন নিজ এলাকার মনি আক্তারকে। যদিও সুমন আগেও বিয়ে করেছিলেন, তবে তা গোপন রেখেছিল। মূলত, তরুণীদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ের পর মোটা অংকের টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিত। চাহিদা মতো যৌতুক না দিলে নির্যাতন করত।

মনির ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে। চাহিদা মতো সুমনকে একটি মোটরসাইকেল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও নির্যাতন থামেনি। শেষ পর্যন্ত নির্যাতন করে গর্ভজাত সন্তানসহ স্ত্রীকে মেরেই ফেলে পাষুণ্ড সুমন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মনিকে তার পৈতৃক বাড়ি ভুজপুরে নিয়ে আসে সুমন। সেখানে গিয়ে টাকা চেয়ে না পেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরার পথে আবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ভুজপুর থানাধীন কালিকুঞ্জ এলাকায় এসে সুমন তার স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন করে। এরপর মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। ২৬ দিন হাসপাতালে থাকার পর ২৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন মনি আক্তার।

এ ঘটনায় ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর মনি আক্তারের ভাই মো. আব্বাস বাদি হয়ে মামলা করেন। ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল বায়েজিদ বোস্তামি এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৭। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়।

আজ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ গর্ভজাত সন্তানকে খুন করার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ আদালত। এছাড়া আদালত আসামিকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, আসামি সুমনের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীসহ গর্ভজাত সন্তানকে খুন করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালত তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আসামিকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন