দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়ে কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি নেজাম উদ্দীন। এ সময় তাকে মারধরসহ জামাকাপড় ছিঁড়ে পেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়ে যায় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। বর্তমানে তিনি দামপাড়া পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে, নেজাম উদ্দীন শহরের বিভিন্ন থানায় ওসি থাকাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ফাঁসানোসহ ৫ আগস্টের পর বহু মামলার আসামি নেজাম উদ্দীনকে বিচারের আওতায় না নিয়ে এসে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাঁচলাইশ থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন নেজাম উদ্দীনের কাছে নির্যাতনের শিকার হওয়া বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, তাকে গ্রেফতার দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। ওসি নেজাম যে মামলায় আসামি সেটি তদন্তাধীন। আর তা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারাধীন।
ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে নেজাম উদ্দীনকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটিও ওসি নেজামের বিষয়। তিনি সুস্থ হওয়ার পর অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরও বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত। বিক্ষুব্ধরা থানা প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে গেছেন।
নেজাম উদ্দীনকে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সামনে প্রথম দেখেছিলেন কবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম শহীদ এবং দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নুর হোসেন। পরে সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নেজাম উদ্দীনকে ঘিরে ধরেন এবং কলার ধরে টানাটানি করেন। এ সময় মারধরও করেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাদের হাত থেকে হেফাজতে নেয় নেজাম উদ্দীন।
এ প্রসঙ্গে শহিদুল ইসলাম শহীদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমি পাসপোর্ট অফিসে একটা কাজে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা তাকে দেখতে পাই। তাকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি কোত্থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, তিনি ঢাকা থেকে ছুটি নিয়ে এসেছেন। তিনি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। আমরা বলেছি, আপনি আমাদের এত বছর অত্যাচার করছেন আমরাও তো অনুরোধ করে পা পর্যন্ত ধরেছিলাম। আপনি আমাদের ছাড়েননি। তিনি আমাদের বলেন, উপরের নির্দেশ ছিল। এরপর আমি তাকে টেনে নিয়ে আসতেছিলাম। ওসি সোলায়মান ভাই বলেছেন, ছেড়ে দিতে পুলিশের কাছে। কিন্তু আমরা থানায় আসার পর দেখছি তারা ওসি নেজামকে ছেড়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নেজাম বাকলিয়া থাকাকালীন আমাদেরকে যেখানে পেয়েছে সেখানে মেরেছেন। তিনি আমাকে লাঠি দিয়ে গাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে মেরেছিলেন। প্রকাশ করলে ঘরের সবাইকে তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানা পুলিশ আমাদের সাথে কথা না বলেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এটার সুষ্ঠু বিচার না হলে ওসি সোলায়মানের প্রত্যাহার চাই।