১৪ই মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামে ‘রহস্যময়’ ছয়তলা বাড়ি, মালিক কে জানে না কেউ !

ছবি : সংগৃহীত

শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্র চকবাজারের চট্টেশ^রী রোডের ‘হামর্দদ বিল্ডিং’ হিসেবে পরিচিত ‘হারুনুর রশিদ চৌধুরী ভিলা’র নেই মালিকানার কোনো কাগজপত্র। এমনকি নির্মাণের অনুমোদন সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানা নেই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছে। ফলে ভবনটির প্রকৃত মালিক কে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তবে, নির্মাণের পর গত ১৮ বছর ধরে ভাড়া তোলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর পরিবার।

এদিকে, রেজাউল করিমের পরিবার মালিকানা দাবি করলেও দেখাতে পারেননি কোনো প্রমাণাদি। অন্যদিকে, নির্লিপ্ত সিডিএ। রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন দায়িত্বশীলরাও।

অভিযোগ আছে, ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা রেজাউল করিম চৌধুরী। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভবনটি দখলে রেখে ১৮ বছর ধরে ভাড়া আদায় করছেন তিনি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর চসিকের মেয়র পদ হারান রেজাউল। এরপর থেকে আত্মগোপনে আছেন। তার বহদ্দারহাটের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। মূলত, এরপর থেকে ভবনটি নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের রাজনীতি ও সিডিএতে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

সরেজমিন দেখা যায়, ছয় তলা ভবনটিতে ১২ থেকে ১৫টি পরিবার ভাড়ায় থাকেন। নিচের তলায় আছে বেশ কয়েকটি দোকানও।

ভবনের দারোয়ান আলমগীর জানিয়েছেন, রেজাউল করিম মেয়র থাকাকালীন সময়ে তার নিজের লোক এসে ভাড়া নিয়ে যেতেন। এখন নিয়ে যান রেজাউল করিম চৌধুরীর ভাই নজরুল করিম চৌধুরী। মাঝে মধ্যে সুমন নামের এক ব্যক্তিও আসেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে দীর্ঘদিন ভবনটিতে থাকছেন এমন কয়েকজন ভাড়াটিয়া ও এলাকাবাসী জানান, ১৮ বছর ধরে এটি রেজাউল করিম চৌধুরীর পরিবারের ভবন হিসেবে দেখে আসছি। সাবেক মেয়রের ভাই ও প্রতিনিধিরা এসে নিয়মিত ভাড়া নিয়ে যান। ১৮ বছর আগে কে ছিল জানা নেই।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী তানজির গণমাধ্যমকে বলেন, ওই ভবনের বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। এরপর আমাদের লোক পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেও ভবনের বা অনুমোদনের কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেননি কেউ।

সিডিএর অনুমোদন আছে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবনটি অনেক পুরোনো। এর অনুমোদন ছিল কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। তবে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সাবেক মেয়রের ভাই নজরুল করিম চৌধুরী বলেন, ১৯৫৬ সালে বাবা জায়গাটা কিনে সন্তানদের নামে আমমোক্তারনামা করেন। এটি আমাদের পারিবারিক ভবন। তবে ২০০৭-০৮ সালের দিকে একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। বর্তমানে ভবনটি কয়েকজন কিনে নিয়ে তারাই ভাড়া আদায় করেন।

তবে কোন কোম্পানি বা বর্তমানে কয়জনের মালিকানায় ভবনটি আছে, বা কারা কারা ভবনটি কিনেছেন সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

সূত্র : কালবেলা

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন