৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫

এখনই মেয়র নন ডা. শাহাদাত, চেয়ারে বসা নিয়েও আছে শঙ্কা

ডা. শাহাদাত হোসেন

শেয়ার করুন

১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ জানিয়ে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঘোষণা করেছে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আদালত। কিন্তু, কমিশন না থাকায় আগামী এক মাসেও গেজেট প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ আছে ৩০ দিন।

নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার যুগ্ম সচিব ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইসি গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এক্ষেত্রে ইসি তো আর আপিল করতে পারেন না। এখন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ৩০ দিন সময় রয়েছে। আপিলের সময় পর্যন্ত ইসি গেজেট প্রকাশ করতে পারেন না। কেননা, আপিলের সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে বিবাদীপক্ষ যদি আপিল করেন তাহলে আপিল নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে কোনো ভোটের গেজেট প্রকাশ করতে হলে ফুল কমিশনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। বিগত কমিশন পদত্যাগ করায় সে অনুমোদন নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই নতুন কমিশন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কেউ আপিল না করলেও গেজেট প্রকাশ করা যাবে না।

নির্বাচন কমিশন যা বলেছে :

ইসির এই যুগ্ম সচিব বলেন, আদালতের আদেশ যতটুকু বাস্তবায়নযোগ্য ততটুকু বাস্তবায়ন করব। যেটা বাস্তবায়নযোগ্য না সেটা বাস্তবায়ন হবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের কাছে রায়ের কপি এলে আমরা দেখব। এমন না যে যেভাবে আদেশ দিয়েছেন সেভাবেই করতে হবে বিষয়টি এমন না।

তিনি আরও বলেন, এখন কমিশন নেই। কমিশনের অনুমোদন আগ পর্যন্ত হয়তো আমরা উপদেষ্টা পরিষদ পর্যন্ত যেতে পারি। যেহেতু স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার ভেঙে দিয়েছে এবং সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে, এতে মনে হচ্ছে বিষয়টি বেশি একটা কাজে আসবে না। কারণ কমিশন থাকা অবস্থায়ও যদি এই আদেশ হতো, তাহলে কি হতো, ওই বাতিলের খাতায় তো পড়ে যেতো। এখন ওই পরিষদগুলোই তো বাতিল। সরকারের আদেশে যেহেতু বাতিল হয়েছে এই বিষয়টা অনেকটা ইনফ্রাকচুয়াস (অকেজো)। বড় কথা হলো গেজেট করতে হলে কমিশন লাগে। এখন কমিশন নেই। কমিশনের অনুমোদনের পরিবর্তে বিকল্প কি আছে সেটা আমাদের পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।

মামলা তো সরকারের সিদ্ধান্তের আগে করা, সেক্ষেত্রে ইসির আইনি পদক্ষেপ কী হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসির অনুপরিস্থিতিতে বিকল্প কি করা যেতে পারে তা পর্যালোচনা না করে বলা যাচ্ছে না। করণীয় বলতে সরকার যদি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষমতা দেয়, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আমরা আসলে কোনটি করবো সেটি পর্যালোচনা না করে বলা যাবে না। কমিশন না থাকায় এখন এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল আইনে যা আছে

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯, এ নির্বাচনী বিরোধ বিষয়ে বলা হয়েছে, এ আইনের অধীন নির্বাচন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশন একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে।

নিবার্চনী ফলাফল গেজেটে আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে উপধারা (১) এর অধীন গঠিত নিবার্চনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা যাবে এবং নিবার্চনী ট্রাইব্যুনাল করপোরেশনের নিবার্চন সংক্রান্ত যেকোনো মামলা দায়ের করার ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে।

নিবার্চনী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মামলার রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে উপধারা (১) এর অধীন গঠিত নিবার্চনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করা যাবে এবং নিবার্চনী আপিল ট্রাইব্যুনাল করপোরেশনের নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো আপিল দায়ের করার ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন