১৪ই মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রাম ওয়াসায় অভিযান, প্রায় ৪ হাজার কোটির প্রকল্পে অনিয়ম খুঁজে পেল দুদক

শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম ওয়াসায় অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে অনিয়ম, লোকবল নিয়োগে সাবেক এমডি একেএম ফজলুল্লাহর ব্যাপক স্বজনপ্রীতি এবং পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে নথি গায়েবের তথ্য পেয়েছ দুর্নীতি দমন কমিশন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে দুদকের অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল।

অভিযান শেষে সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, হালিশহরে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেখানে নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে অনিয়ম অর্থাৎ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা সরেজমিনে সকালে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে অনেকগুলো ফাটল দেখতে পেয়েছি। এই ফাটল দেখার পরে এখানে এসেছি এবং প্রকল্প পরিচালকের সাথে কথা বলেছি। প্ল্যান্টে ফাটলের বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছি। উনি বললেন, প্রকল্পের কনসাল্টেড ফার্মের সাথে কথা বলেছেন এবং ফাটল সিল করার জন্য যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হবে সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এখনো রিপোর্ট পাননি। রিপোর্টে রাসায়নিক যথাযথ পাওয়া গেলে ফাটলগুলো সিল করা হবে।

নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, এটি খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই। এটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞরা বলতে পারবেন। তবে ফাটল দেখা গিয়েছে। এটি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে অথবা পারিপার্শ্বিক কারণেও হতে পারে।

পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে সাবেক এমডির বিরুদ্ধে ফাইল গায়েবের অভিযোগ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাবেক এমডি দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। বিশেষ করে ২০২০ সালে ওয়াসা ভবনের তৃতীয় তলায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সাজানো ছিল— এমন অভিযোগ এসেছে। যেখানে অনেকগুলো নথি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গায়েব করা হয়েছে বলা হয়েছে। আমরা জানতে চেয়েছি এ বিষয়ে। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির একটি তদন্ত প্রতিবেদন আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। এটি আমরা বিস্তারিত স্টাডি করে বলতে পারবো।

স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ওনার (একেএম ফজলুল্লাহ) শেষ ৬ মাসে যে নিয়োগ বা বদলিগুলো হয়েছে এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চেয়েছি। সচিব মহোদয় এগুলো দেওয়ার কথা বলেছেন। সেই রেকর্ডপত্র পেলে আমরা যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না জানতে পারবো।

ওয়াসার এক কর্মকর্তাই স্বজনপ্রীতির তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখানকার ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদ সাহেবের কাছে একটা তথ্য পেয়েছি। সেটা হচ্ছে, একটা স্যুয়ারেজ প্রকল্প ছিল। সেই প্রকল্পে সাবেক এমডি সাহেবের ভাগিনা সরোয়ার জাহানের স্ত্রীকে যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রজেক্টের যিনি পরিচালক এবং নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন, অভিযোগ ছিল জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে যারা জুনিয়র ছিল তাদেরকে পদোন্নতি দিয়ে পরিচালক করা হয়েছে। আমরা সচিব মহোদয়ের কাছে জেষ্ঠ্যতার তালিকা চেয়েছি। এটা বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে আমরা বলতে পারব জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে কি-না।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন