চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে ঘিরে ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে আসামি হওয়া ৬৩ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আলামত দিতে না পারায় সবার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরকার হাসান শাহরিয়ার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
অন্যদিকে, এ আদেশে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাদিপক্ষের আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, জামিন পাওয়া আইনজীবীরা ছিলেন ঘটনার উস্কানিদাতা। এ ধরনের মামলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পায় না, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে হয়।

এদিকে, আদেশের পরপরই আইনজীবীদের একাংশ আদালত চত্বরে এসে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর, ইসকনের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, আলিফ ভাই কবরে খুনি কেন বাইরে’- এ ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তারা আসামি আইনজীবীদের জামিন দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিক্ষোভ করতে থাকেন।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ৬৩ জন আইনজীবী আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছেন। এক হাজার টাকার বন্ডে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন মামলার চার্জশিট দায়ের না হওয়া পর্যন্ত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আজকের মামলাটি মূলত তার বড় ভাইয়ের করা ভাঙচুর এবং বিস্ফোরক আইনের মামলা। এখানে সম্পৃক্ত হওয়া ৬৩ আইনজীবী ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। যিনি মামলা করেছেন তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া যে আলামত দেওয়ার কথা ছিল; তার কিছুই দিতে পারেননি তিনি। বিজ্ঞ আদালত আমাদের শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে এই মামলার চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত ৬৩ জন আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জামিন প্রার্থী আইনজীবীরা এজলাসে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে এক ঘণ্টা ধরে শুনানি চলে।
আদেশের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, শহীদ আলিফ ভাইয়ের বড় ভাইয়ের মামলায় আজ যে আসামিরা আত্মসমর্পণ করেছেন তারা ছিলেন ঘটনার উস্কানিদাতা। আজকে আদালত এই মামলায় ৬৩ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন। শহীদ আলিফের হত্যাকারীদের জামিন দেওয়ায় আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ ধরনের আদেশে আমরা ক্ষুব্ধ।

তিনি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতর করে দ্রুত চার্জশিট দিয়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির আদেশ দিয়ে মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান।