১৪ই মার্চ, ২০২৫

ধর্ষণ নয়, ‘অনুপ্রবেশ-চুরি-ডাকাতি’র মামলায় ভারতে গ্রেফতার আ.লীগ-যুবলীগের ৪ নেতা

শেয়ার করুন

‘ধর্ষণের অভিযোগে ভারতে চার আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার’ শিরোনামে গত ৮-৯ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের অনেক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। এসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে ধর্ষণের অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।

তবে, ৪ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকে গ্রেফতার করেছে এটা সত্য, কিন্তু ‘ধর্ষণ’র অভিযোগে নয়। তাদের মূলত অনুপ্রবেশ, ছিনতাই, জাতীয় সড়কে ডাকাতি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মেঘালয় রাজ্যের একটি ফৌজদারি মামলায় পালিয়ে থাকা চারজন বাংলাদেশিকে কলকাতা থেকে তারা ( মেঘালয় পুলিশ) গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে। এরা সবাই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে এদের বিরুদ্ধে মেঘালয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আছে বলে যে খবর রটেছে, তা সঠিক নয় বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মেঘালয় পুলিশের মহাপরিচালক ইদাশিশা নংরাং।

নংরাং বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘ওই চারজনের বিরুদ্ধে ডাউকি থানার একটা মামলা ছিল। কোনো ধর্ষণের অভিযোগ নেই এদের বিরুদ্ধে। ডাউকি থানায় এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার চারটি ধারা এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় অভিযোগ ছিল। সেই মামলাতেই কলকাতা থেকে এদের গ্রেফতার করে আনা হয়েছে।’

একই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করে মেঘালয়ের স্থানীয় পত্রিকা শিলং টাইমস। এ পত্রিকায় ৯ ডিসেম্বরের একটি প্রতিবেদনে তাদের আটকের ব্যাপারে বলা হয়েছে, গত রোববার কলকাতায় চারজন আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা গত মাসে পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলসের ডাওকিতে স্থানীয় ট্রাক চালকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান এবং সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি। গ্রেফারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এবং ডাওকি পুলিশ স্টেশনে একটি মামলাও হয়েছে এই ঘটনায়।

ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, কলকাতার নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাট থেকে মেঘালয় পুলিশ কলকাতা পুলিশের সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করে।

বারাসত আদালতের এক আইনজীবী আসলামউজ্জামানের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, ‘অনুপ্রবেশ, ছিনতাই, জাতীয় সড়কে ডাকাতি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও মারধরের অভিযোগে ধৃতদের রবিবার বারাসত আদালতে আনা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডের জন্য আনা হলেও আদালত ছুটি থাকায় বিচারকের সামনে হাজির করানো হয়নি। ধৃতদের শিলং নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি আব্দুল লতিফ রিপন ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ইলিয়াস আহমদ জুয়েল।

কলকাতায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, শিলং ছেড়ে কলকাতায় আসার সময় তারা স্থানীয় থানায় অবগত করে আসেননি। পরে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে পুলিশ খোঁজ নিলে ফ্ল্যাট কর্তৃপক্ষ তাদের থানায় যোগাযোগের জন্য বলে। কিন্তু কলকাতা থেকে শিলংয়ের দূরত্ব বেশি হওয়ায় তারা আবার সেখানে গিয়ে স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে বিষয়টি অবগত করেননি।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন