১৪ই মার্চ, ২০২৫

হঠাৎ চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, একদিনে ৫ জনের মৃত্যু

ফাইল ছবি

শেয়ার করুন

দেশে হঠাৎ ডেঙ্গু রোগী আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে এবং মৃত্যুর সংখ্যাও। জানা গেছে, আজ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে ১৯ জনের মৃত্যু হয়।

এ ছাড়া এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৫৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল সোমবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালে। অপর দিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং খুলনা বিভাগের হাসপাতালে একজন করে মোট তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ১২১ জন ভর্তি হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৩ জন ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশনের বাইরে)। এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় ৭৮ জন, খুলনা বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ৫৯, বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ৩৭, রাজশাহী বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ১৮, ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ১৭ ও রংপুর বিভাগের হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ১ জন ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে করণীয় :

এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. সাইফুল্লাহ বলেন, যেসব স্থানে মশা ডিম পাড়ে বা শূককীট বেড়ে ওঠে, সেগুলোকে ধ্বংস করতে হবে। তাই বাড়ির আঙিনা ও ঘরের ভেতরে যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানি তিন দিন অন্তর ফেলে দিতে হবে। প্লাস্টিকের নানা ধরনের পাত্র, কোমল পানীয়ের বোতল, কলাপসিবল গেটের নিচের অংশ, ফেলে দেওয়া টায়ারের অংশ, দইয়ের ফেলে দেওয়া পাত্র, ছাদবাগানের ফুলের টব, পানির মিটারের কাছের গর্ত, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত কর্কশিট, সিরামিকের পাত্র, সিঁড়ির পাশের ভাঙা হাতল, যানবাহনের অংশ, গাড়ির গ্যারেজসহ অনেক কিছুতেই ডেঙ্গু মশার লার্ভা থাকে। এসব জায়গায় জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা জরুরি।

মশার সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে :

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেছেন, কিছু সুগন্ধ মশার একেবারেই অপছন্দ। বাজারে নানা রকম সুগন্ধি তেল পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে ল্যাভেন্ডার, ইউক্যালিপটাস, লেমনগ্রাস ও পিপারমিন্টের গন্ধ মশা সহ্য করতে পারে না। ঘরে এসব সুগন্ধ ব্যবহার করলে মশা দূরে থাকবে। এ ক্ষেত্রে নিমের তেল বেশ কার্যকর। মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে ঘুমানোর সময় ঘরের জানালা একেবারে বন্ধ করলে ঘরে বাতাস চলাচল ব্যাহত হয়। তাই সমাধান হিসেবে জানালায় লাগানোর জন্য নানা মাপের মশার জাল কিনে নেওয়া যেতে পারে।

মশা আমাদের ঘামের গন্ধ অনুসরণ করে কামড় বসায়। তাই রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করে নিলে ঘামের গন্ধ দূর হয় এবং মশার কামড় খাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। এ ছাড়া বিছানার চাদর, বালিশ ইত্যাদিও গন্ধমুক্ত রাখতে হবে।

ভেষজ কিছু গাছ আছে, যেগুলো ঘরে টবের মধ্যে সাজিয়ে রাখলে মশার আনাগোনা কমে। যেমন রোজমেরি, পুদিনা, ভুঁইতুলসী, ক্যাটনিপ, রসুনগাছ ইত্যাদি।
ঘুমের আগে আলসেমি লাগলেও মশারি টানিয়ে নিন। শিশু ও বৃদ্ধদের বিছানায় মশারি টানাতে ভুলবেন না।

আরও পড়ুন : আবু সাঈদকে গুলি করা সেই পুলিশ সদস্যরা গ্রেফতার

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন