১৯শে জুন, ২০২৫

খালেদা জিয়া-তারেককে মুর্খ বলার প্রতিবাদ করায় যুবদল নেতাকে চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসানোর দাবি

শেয়ার করুন

ব্যবসায়ীক বৈঠকের ফাঁকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক প্রসঙ্গে আলাপচারিতা চলছিল। এ সময় কথা প্রসঙ্গে গল্পের ছলে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে মুর্খ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার হাসিবুল হাসান। এতে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন ব্যবসায়ীক বৈঠকে উপস্থিত থাকা চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শওকত আকবর সোহাগ। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘাতে জড়ান। এতে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ তিনজন আহত হন। ঘটনার পর সোহাগ সেখান থেকে চলে গেলে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসিয়ে সোহাগকে গ্রেফতার করানো হয়। এমনটাই দাবি করেছেন মিরসরাই উপজেলা বিএনপি এবং জেলা যুবদল

গতকাল সোমবার (১৯ মে) রাতে মিরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রি লিঃ কোম্পানিতে এই ঘটনা ঘটে।

মিরসরাই উপজেলা বিএনপি এবং উত্তর জেলা যুবদলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বিকাল ৪টার সময় শওকত আকবর সোহাগ ও তার সহযোগীরা ব্যবসায়ীক কারণে অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডে যান। ব্যবসায়ীক বিষয় নিয়ে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার হাসিবুল হাসান, প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. আব্দুস সামাদ, প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার সাইফু ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে একটি গোলটেবিল বৈঠক করছিলেন। বৈঠকে ব্যবসায়ীক আলাপচারিতার ফাঁকে রাজনৈতিক আলাপ করছিলেন। এ সময় গল্পের ছলে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মুর্খ, তারেক রহমান মুর্খ ও তাদের দল বিএনপির নেতাকর্মী সবাই মুর্খ বলে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন কারখানার জেনারেল ম্যানেজার হাসিবুল হাসান। এমন মন্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান শওকত আকবর সোহাগ।

এ সময় সোহাগের সঙ্গে থাকা তার অনুসারীদের মধ্যে কারখানায় অবস্থানরত ৮ থেকে ১০ জনের সাথে হাতাহাতির পর সংঘাতের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে তারা কারখানা ত্যাগ করেন। কিন্তু রাত ১০টার দিকে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকায় শওকত আকবর সোহাগের সাথে দেখা করে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চান। দেখা করার পর ঘটনাস্থল ওই কারখানায় যান। এরপর সেখানে একে একে সীতাকুণ্ড সার্কেল এএসপি লাবিব আব্দুল্লাহ ও এডিশনাল এসপিসহ পুলিশের প্রায় ২০টি গাড়ি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে শওকত আকবর সোহাগকে জোরারগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতেই কারখানার পরিচালক হাসিবুল হাসান বাদি হয়ে হামলা ও ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন।

জানতে চাইলে কারখানা পরিচালক কামরুল হোসেন বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। জেনারেল ম্যানেজারের কাছে চাঁদাবাজি ও হামলার ঘটনা শুনে আইনি পদক্ষেপ নিতে রাতেই কারখানায় আসেন। পরে থানায় গিয়ে মামলা করেন।

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল আউয়াল চৌধুরী জানান, কারখানাটির সাথে শওকত আকবর সোহাগের ব্যবসায়ীক যোগাযোগ ছিল। ব্যবসায়িক কারণেই মার্কেটিং করতে কারখানায় গিয়েছিল জানতে পেরেছি। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় সোহাগ প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। কিন্তু গ্রুপিং রাজনীতির কারণে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে শওকতকে ফাঁসানো হয়েছে‌ বলে জানতে পেরেছি।

মিরসরাই শিল্প জোন অথোরিটি বেজার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চাঁদাবাজির বিষয়টি সত্য নয়। আমরা জেনেছি বিষয়টি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিম ও সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন চৌধুরী জানান, বিষয়টি এখন আর উত্তর জেলা পর্যায়ে নেই। এটা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চলে গেছে। কেন্দ্র বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক উদঘাটন করবে আশা করছি। আমরা প্রথমে শুনেছি চাঁদাবাজি পরে ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি এটি রাজনৈতিক বিষয়।

বিষয়টি জানতে জোরারগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ সাব্বির মোহাম্মদ সেলিমের ব্যবহৃত সরকারি নম্বরে বারবার চেষ্টা করে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন