অপারেশন সিঁদুর: জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহারের সহযোগীসহ পরিবারের ১০ স্বজন নিহত

শেয়ার করুন

‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে। এই অভিযানে জঙ্গি নেতা জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এছাড়াও তার চার ঘনিষ্ঠ সহযোগীও এই হামলায় নিহত হয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরসহ একাধিক এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলায় মাসুদ আজহারের প্রধান ঘাঁটি মসজিদ ওয়া মরকজ তইবা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আজহারের মাদ্রাসা ও তার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তবে এই ভিডিওর সত্যতা এখনও স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

মুম্বাই হামলার জংগী আজমল কাসাবের দুই কমান্ডার হাফিজ আবদুল মালিক ও বুরহানুদ্দিন মুরদিকে হামলায় মারা গেছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এই অভিযান জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে গত মাসে পর্যটকদের ওপর চালানো একটি প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়েছে। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যার পেছনে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হাত ছিল বলে দিল্লির অভিযোগ। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ কেবল সন্ত্রাসবিরোধী অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছে এবং কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়নি।

এক্স-এ পোস্ট করা একাধিক বার্তায় দাবি করা হয়েছে, মাসুদ আজহার নিজে এই হামলায় বেঁচে গেলেও তিনি বলেছেন, “আমি মরে গেলে ভালো হতো।”

অন্যদিকে, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে শহরের একজন বাসিন্দা ইউনিস শাহ বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভারতের ছোড়া চারটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে আঘাত হেনেছে। এই হামলায় ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানি সূত্র দাবি করেছে।

ভারত সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অপারেশন সিঁদুর একটি পরিমিত ও লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল আত্মরক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা। আমরা যথেষ্ট সংযম দেখিয়েছি।” ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাতভর এই অভিযানের ওপর নজর রেখেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তবে মাসুদ আজহারের মৃত্যু বা তার পরিবারের সদস্যদের হতাহতের বিষয়ে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মাসুদ আজহার ২০০১ সালে ভারতীয় সংসদে হামলা এবং ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার অন্যতম মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে তার গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল। এই অভিযানকে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী নীতির একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন