সম্প্রতি চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি দেয়া হয়েছে। কমিটিতে চট্টগ্রামে আন্দোলনের সময় সম্মুখ সারিতে থাকা নেতাদের মাইনাস করে ব্যবসায়ী-নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত এবং কিশোর গ্যাং সদস্যদের স্থান দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে সমন্বয়কদের একাংশের। তাই এ কমিটি অবাঞ্চিত ঘোষণার পাশাপাশি গণপদত্যাগের কথাও জানান তারা। তাদের দাবি, ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আন্দোলনে মূখ্য ভূমিকায় থাকা যোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করে কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়কদের একাংশ। এ সময় তিন দফা দাবি জানান তারা। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে অবরোধ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

সমন্বয়করা বলেন, যারা আন্দোলনে ভূমিকা রাখেনি এবং সম্মুখ সারিতে ছিলেন না তাদেরই কমিটির প্রধান পদে রাখা হয়েছে। অথচ যারা চট্টগ্রামে আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলেন তাদের মাইনাস করেই এ কমিটি দেওয়া হয়। আন্দোলনের সময় না থেকে যারা গত ৬ মাসে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে তাদেরই স্থান দিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রে যাদের বিরুদ্ধে নারী-ব্যবসায়ী হেনস্তার অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, কেন্দ্রের কাছে চট্টগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে নারী-ব্যবসায়ী হেনস্তা এবং কিশোর গ্যাং নিয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। এরপরও তাদের রেখেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সনাতনী ও অন্যান্য ধর্মালম্বীদের স্থান দেওয়া হয়নি। নারী সম্মুখ যোদ্ধাদের মধ্যে যারা সম্মুখ সারিতে ছিল তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় কেন্দ্র থেকে ঘোষিত একটা সমন্বয়ক তালিকা ছিল। কেন্দ্র থেকে এসে চট্টগ্রামের কোনো সমন্বয়কের কাছে আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে একবারের জন্য জানতে চাওয়া হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের সময় কেন্দ্র ঘোষিত চট্টগ্রামে যারা সমন্বয়ক হিসেবে ছিলাম এবং নতুন কমিটিতে যাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে নতুন কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। একইসঙ্গে নতুন কমিটিতে আমাদের যে যে পদ দেওয়া হয়েছে; সেই পদ থেকে পদত্যাগ করছি’ —যোগ করেন সমন্বয়করা।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি জানানো হয়। এসব দাবি না মানলে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি এসব দাবি সময়ের মধ্যে না মানলে তার পরিপ্রেক্ষিতে যা কিছুই হবে সেসবের ‘দায়ভার’ হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিতে হবে। একইসঙ্গে রাফিকেও এর দায় নিতে হবে।
তিন দফা দাবিগুলো হলো :

- বিকেল ৩টার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি বাতিল করতে হবে। মূল আন্দোলনকারীদের নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করতে হবে।
- আগামী তিনদিনের মধ্যে কমিটি গঠনের আগে অভিযুক্ত সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- ব্যক্তির পছন্দে গঠিত কমিটিসমূহ গঠনের সঙ্গে জড়িত সকলের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।