আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, আপনাদের যে বিশাল ফ্লাইওভার (এলিভেটডের এক্সপ্রেসওয়ে), এটার ওপর দিয়ে আসার সময় একটাও এক্সিট দেখলাম না। এত বড় ফ্লাইওভারে মিনিমাম ১০টা এক্সিট দেওয়ার কথা ছিল। চট্টগ্রামের লোকেরা বলে একজন ব্যক্তির জন্য টানেল করা হয়েছে যেন সে বাড়ি থেকে এয়ারপোর্টে যেতে পারে। আরেকজন ব্যক্তির জন্য ফ্লাইওভার (এক্সপ্রেসওয়ে) করা হয়েছে তার বাসা থেকে যেন এয়ারপোর্টে যেত পারে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে এবি পার্টির পাঁচ প্রস্তাব’ শীর্ষক মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, একটা রাষ্ট্র তার উন্নয়নের মডেল তৈরি করেছে একটা লুটপাটের মডেল দিয়ে। তাহলে কিভাবে এটা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সাথে যায়? কারণ কথা ছিল রিপাবলিক করার। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা টাকা-পয়সা যে আপনি খরচ করবেন এটা মানুষের জন্য হতে হবে।
চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে চট্টগ্রামে এতো বন্যা-জলাবদ্ধতা হতো না। সেই চট্টগ্রামে এখন প্রতিবছর অসম্ভব রকমের ঘাপলা মারা বন্যা হয়। এমনকি আপনাদের সাবেক মেয়রের বাসার নিচতলা নাকি ডুবে গেছে। তাহলে আপনি কি প্ল্যান করলেন? বন্যা হচ্ছে কেন? আপনাদের এখানে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শুধুমাত্র দিন-তারিখ কারেকশন করতে গিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে। এসব প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে এই টাকাগুলো খেয়ে ফেলেছে। তাহলে সিডিএ’র প্ল্যান কোথায়? এখানে তো উন্নয়ন নয়, শুধু ভোগান্তি দেখতে পাচ্ছি। কারণ আমি যে রিপাবলিক মডেলের রাষ্ট্র করতে চেয়েছিলাম এটার সাথে যায় না। যে উন্নয়ন প্রকল্প করলে মাসের পর মাস মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকে সেই প্রকল্পে কোনো ইনসাফ নাই।

চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের হুঁশিয়ারি করে তিনি বলেন, সীমান্ত থেকে এসে যারা চট্টগ্রামের এক ইঞ্চি মাটিতে হাত দেবে তাদের কারো চোখ থাকবে না, হাতও থাকবে না। জুলাই-আগস্টের পরিবর্তনের পরে এই কলকাতা নিয়ে যাওয়া, চিকেন নেকের গল্প মনে করিয়ে দেওয়া, ফেনী নদীর ওপারে কেটে চট্টগ্রাম আলাদা করে নিয়ে যাবে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ঝামেলা চলছে…। আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অংশ যেকোনো মূল্যে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আত্মমর্যাদা এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না। সেজন্য দেশের প্রত্যেকটা পরতে পরতে যদি রিভাইজ করতে হয় আমরা করবো।
এবি পার্টি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আত্মমর্যাদা এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আপোষহীন উল্লেখ করে তরুণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, যারা বাংলাদেশের চিকেন নেক নিয়ে খেলছে তাদের ভূ-রাজনীতির জ্ঞান আবার নতুন করে পড়াশোনা করতে হবে। কয়েকশত বছর আগের পুরাতন নীলক্ষেতের বস্তাপচা গাইড বই পড়ে যদি মনে করেন, বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে হাত দেবেন তাহলে অনেকবার ভেবে দেখা উচিত।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম নগরের আহ্বায়ক অ্যাডোভোকেট গোলাম ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবুল কাশেম, অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য জাহিদুল করিম কচি, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম প্রমুখ।