হাসপাতালে হিমোফিলিয়া সোসাইটির একটি সচেতনতামূলক কর্মশালা ও প্রচারণা সভা ছিল। এতে অংশ নিয়েছিলেন চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ রোগী ও স্বজনরা। কর্মশালা শেষে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় বাজারের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে অর্ডার করা কাচ্চি বিরিয়ানি। সেই বিরিয়ানি খেয়ে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করা প্রায় ৯০ জনের মধ্যে অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, দুঃখ প্রকাশ করে দায় এড়োনোর চেষ্টা রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের।
ঘটনাটি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঘটেছে। স্থানীয় চাম্বল বাজারের এরআর কিচেন নামের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে ৯০ প্যাকেট বিরিয়ানি অর্ডার করেছিল আয়োজকরা। রেস্টুরেন্টটির মালিক মোহাম্মদ আরাফাত।
সত্যতা জানতে চাইলে স্বীকার করেছেন হিমোফিলিয়া সোসাইটির কর্মকর্তা, বাঁশখালী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীন।
জানা গেছে, বিরিয়ানি অর্ডার নেওয়ার সময় ঢাকা-চট্টগ্রামের নামি দামি হোটেল রেস্টুরেন্টের চেয়ে খাবার ভাল হবে বলে লোভ দেখিয়ে এক দালালের মাধ্যমে চাম্বল বাজারের এই রেস্টুরেন্টে অর্ডার দেওয়া হয়। কর্মশালা শেষে শনিবার দুপুর ২টার দিকে মেহমানরা খাবার খেতে বসে দেখেন অত্যন্ত নিম্মমানের। পঁচা-বাসি খাবার গরম করে প্যাকেটজাত করা হয়। এমনকি খাবারের সুঘ্রানের পরিবর্তে দুর্গন্ধ ছড়ায়। খেতে বসে অনেকেই না খেয়ে উঠে যান।
আয়োজক হিমোফিলিয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি দিদারুল আলম জানান, আমরা উপজেলা সদর জলদীতে অর্ডার দিতে চাইলে জনৈক শাহনেওয়াজের মাধ্যমে চাম্বল বাজারের এআর কিচেন নামে এই রেস্টুরেন্টে আমরা অর্ডার করি। পরবর্তীতে তার কথামতো আমাদের কাচ্চি বিরিয়ানি সরবরাহ না করে নিম্মমানের খাবার ধরিয়ে দেওয়া হয়। খাবার খেতে গিয়ে অনেকেই টেবিল থেকে উঠে যান। অনেকেই অসুস্থ বোধ করেন। এমনকি কারও কারও ডায়েরিয়া হয় বলে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। অনেকেই চিকিৎসা নেন। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে এআর কিচেন রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন খাবারে সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, গতকাল আমাদের পুরাতন বাবুর্চি না থাকায় নতুন বাবুর্চি দিয়ে রান্না করতে গিয়ে একটু সমস্যা হয়ে গেছে। খাবারটা নরম হয়ে গেছে। অথচ আমরা সব আইটেম দিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি তৈরি করেছি। কেউ কেউ অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছি, এতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
বাঁশখালী হাসপাতালের টিএইচও ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সব্যসাচী নাথ জানান, রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত নিম্মমানের খাবার সরবরাহ করেছে। বিষয়টি অত্যন্ত খারাপ হয়েছে।
