বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরীর শুলকবহর এলাকায় ফার্নিচার দোকানে কর্মচারি গুলিতে নিহত মো. ফারুক (৩২) হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে ২০১৫ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়া আবুল হাসেম সুমন নামে এক ব্যক্তিকে। বাদ যায়নি আন্দোলনের সময় প্রবাসী থাকা বাবুলও। অভিযোগ উঠেছে, হত্যা মামলায় জড়িত না থাকার বিষয়টি জানানোর পরও পুলিশ হয়রানি করছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগে দায়ের করেছেন প্রয়াত আবুল হাসেমের ছেলে মেহেদী হাসান আকাশ।
আবেদনে আকাশ জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে তার মৃত পিতাকে উক্ত মামলায় ১৯৩ নম্বর আসামি করার পাশাপাশি তার চাচা মোঃ বাবুলকে ১৯৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে৷ মামলার পর থেকে পুলিশ মৃত সুমনের পরিবারকে হেনস্তা করছে বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। আদালত এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে শুলকবহর এলাকার একটি ফার্নিচার দোকান কর্মচারী মো. ফারুক নিহত হন৷ এ ঘটনায় ২৮ আগস্ট নিহত ফারুকের বাবা মো. দুলাল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহারভুক্ত ১৯৩ নং আসামি করা হয় ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়া আবুল হাসেম সুমনকে। একই মামলা ১৯৪ নম্বর আসামি করা হয় তার চাচা মো. বাবুলকে। অথচ তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে অবস্থান করছেন। একই মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, রাউজানের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীসহ ২৬৯ জনকে আসামি করা হয়। পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে আদালতের আরেকটি সূত্র বলছে, একই মামলায় ৭৬ বছরের বৃদ্ধকে ৪৫ বছরের যুবক দেখিয়ে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর বিষয়গুলো জানাজানি হওয়ার পর ভুক্তভোগী আসামিদের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বাদি মো. দুলাল আদালতে হলফ নামা দাখিল করেছেন৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান আকাশের অভিযোগ সঠিক নয় জানিয়ে বলেন, ফারুক হত্যা মামলার এজাহারে আসামির নাম দিয়েছেন বাদী। মামলায় নাম দিয়েছেন বলেই পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করবে তা নয়। ঘটনার তদন্ত হবে। কে বা কারা ফারুক হত্যায় জড়িত তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। পুলিশ বাসায় গিয়ে মৃত ব্যক্তিটির ছেলে সুমন ও তার পরিবারকে হেনস্তার অভিযোগ সঠিক নয়।