১৪ই মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামে বিএনপি নেতার ‘ফিল্মিকাণ্ড’!

শেয়ার করুন

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই দেশ জুড়ে চলছে দখল-পাল্টা দখল। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা দখল ও ভাচুরে ব্যস্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রামে সাবেক এক এমপির জায়গা দখল করতে ফিল্মি স্টাইলে পুরো ডিপো দখল করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম। তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

প্রথমে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ভাটিয়ারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম। কিন্তু ডিপো কর্তৃপক্ষ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রাতের আঁধারে শতাধিক লোকের একটি দল নিয়ে ডিপোতে হামলা চালান। ডিপোর কর্মচারিদের মারধর করে বের করে দিয়ে ৫ কোটি টাকার মালামাল লুট করা হয়। এ সময় সেখানে থাকা একটি প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।

ঘটনাটি গত সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের তাহসিন এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি ডিপোতে ঘটে।

জানা যায়, বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম কয়েশ লোকবল নিয়ে ডিপোতে জোরপূর্বক প্রবেশের পর আওয়ামী লীগের মিটিং চলছে বলে সবাইকে মারধর করা শুরু করে। এরপর সবাইকে বের করে দিয়ে পুরো ডিপো নিজের দখলে নিয়ে নেয়। তার সাথে থাকা লোকজন দিয়ে ডিপোতে থাকা ৫ কোটি টাকার মালামাল দ্রুত সরিয়ে নেন।

সূত্রে জানা গেছে, তাহসিন এন্ড ব্রাদার্স নামে ওই ডিপোর জায়গাটির মালিক মূলত চট্টগ্রাম-৪ আসনের সাবেক এমপি এস এম আল মামুন। তার কাছ থেকে জায়গা ভাড়া নেয় তাহসিন এন্ড ব্রাদার্স। সেখানে লোহার ডিপো করে প্রতিষ্ঠানটি। ৫ আগস্টের পর এমপি মামুন আত্মগোপনে চলে গেলে জায়গাটির ওপর চোখ যায় খোরশেদ আলমসহ প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের।

আরও জানা যায়, জায়গাটি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংকে ঋণ এর বিপরীতে বন্ধক রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক এমপি মামুনের ল্যান্ড কর্মকর্তা মো. মুছা। ২০০৫ সালে সৃজিত ভাটিয়ারী মৌজার নামধারী খতিয়ান ৪৩৩৯।

তাহসিন এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী ওসমান বলেন, আওয়ামী লীগের মিটিং চলছে বলে প্রথমে ডিপোর কর্মীদের মারধর করে বের করে দেয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এদের নেতৃত্বে ছিল বিএনপি নেতা খোরশেদ। সোমবার রাত থেকে আমাদের কোনো লোকজন ডিপোতে নেই। ডিপোতে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার মালামাল ছিল। সেগুলো তারা লুটপাট করছে।

পুলিশকে জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী পুলিশকে ফোন করে জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি। এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে খোরশেদ আলম বলেন, ওই ডিপোতে স্বৈরাচারের দোসর অনেক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী অবস্থান করেছিল। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের তাড়িয়েছে। তাদের অস্ত্র বহনকারী একটি প্রাইভেট কারও আটক করা হয়েছে। এই প্রাইভেট কার থেকে দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। থানার সেকেন্ড অফিসার রাজিব পোদ্দার বলেন, ডিপো দখলের বিষয়ে কোনো তথ্য জানা নেই। এ ছাড়া অস্ত্রসহ কার আটকের বিষয়ও জানেন না তিনি।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন