ভারতের দিল্লিতে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ/ভিডিওতে দেশের তরুণ যুবকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ছাত্রলীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা আসার পর আবারও উঠেছে আপামর ছাত্র-জনতা।
দিল্লিতে বসে তার বাংলাদেশ বিরোধী অপতৎপরতার প্রতিবাদে ২৪-এর বিপ্লবী ছাত্রজনতার উদ্যোগ আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ হাজার হাজার নেটিজেনকে বুলডোজার মিছিলের ডাক দিতে দেখা গেছে।

আওয়ামী লীগ এবং সমর্থকরা এই ভাষণকে ‘রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের বার্তা’ হিসেবে প্রচারণা চালালেও ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ জনতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে—কী ঘটতে যাচ্ছে আজ রাতে?
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হাসিনার ভাষণের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর ভিডিও, ডকুমেন্টারি ও ছবি প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সংগঠনটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়, তারা ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে, বাজার ও জনবহুল স্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চিত্র তুলে ধরবে। একইসঙ্গে, দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে এ বিষয়ে বিশেষ বুলেটিন প্রচারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও শেখ হাসিনার ভাষণের বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ এক পোস্টে লেখেন, আজ ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ এর ৬ মাস পূর্ণ হলো। এই ঐতিহাসিক দিনে বঙ্গের কসাই হাসিনা প্রকাশ্যে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কী দিনটাই না বেছে নিল! এখন আমাদের আবার জাগবার সময়। আসুন, এই ঐতিহাসিক দিনে সব ফ্যাসিবাদী উপাদান নির্মূল করি।
সংগঠনটির যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা. মাহমুদা মিতু ফেসবুক পোস্টে বলেন, আজকে যদি ৩২ শেষ না হয় তাহলে আমিই সব গুলারে চুড়ি কিনে দিবো। হয় ৩৬ না হয় ৩২। আরেক যুগ্ম-সদস্য সচিব রাফে সালমান রিফাত লেখেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ এর নাম চেঞ্জ করে দেন। ফ্যাসিস্ট চত্বর বা পতিত ফ্যাসিস্ট চত্বর। বা এ জাতীয় কিছু। মানুষ আজীবন ঘৃণার সাথে স্মরণে রাখুক ফ্যাসিস্টকে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ৩২ এর সাথে সাথে সমাধি সৌধটাও হিসাবে রাখবেন আর কি মাথায়! ৬ মাসে একটা, এক বছরে আরেকটা। মুখ খুললেই বুলডোজার।
প্রবাসী সাংবাদিক ইলয়িাস হোসেন কর্মসূচির ছবি পোস্ট করে এক পোস্টে লিখেছেন, আপার বক্তব্যের তালে তালে বুলডোজার চলবে। আজ রাত ৯ টায়।
পেরিস প্রবাসী অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকি ভট্টাচার্য লিখেছেন, বুলডোজার পাওয়া যায়নি তো কী হয়েছে, হাতুড়ি, শাবল, গাইতি নিয়ে আসুন। ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে আসুন। ইতিহাসের দায় মোচন করতে আসুন। ফ্যাসিবাদের আতুরঘর নিশ্চিহ্ন করতে আসুন। গান গাইতে গাইতে আসুন, শ্লোগান দিতে দিতে আসুন, সন্তানের হাত ধরে আসুন, প্রেমিক প্রেমিকাকে সাথে নিয়ে আসুন, মুখে হাসি আর বুকে প্রতিরোধের আগুন নিয়ে আসুন। ফ্যাসিবাদের ধ্বংসস্তুপের উপরে ছাত্র জনতার বিজয় নিশান উড়াতে আসুন। আজ রাত নয়টায়। ইতিহাস রচিত হোক। আবু সাঈদ, মুগ্ধরাও আসবে আপনাদের দেখানো পথে। আসুন অসমাপ্ত কাজ আজ আমরা সম্পাদন করি। ইতিহাসের দায় মোচন করি। ছাত্র জনতা সৈনিক ঐক্য জিন্দাবাদ